ভাঙা-চোরা দোকানে জীবন চলে মহিউদ্দিনের সংসার
আব্দুল আলিমঃ নিজস্ব প্রতিনিধিঃ
মহিউদ্দিন সরদার বয়স ৪৫ এরমধ্যে ৮-৯ বছর ভাঙা-চোরা টঙ দোকানে চকলেট-বিস্কুট-মুড়িসহ বাচ্চাদের বিভিন্ন খাবার বিক্রি করছেন তিনি। তার এই ছোট্ট ব্যবসা থেকে উপার্জিত আয়ে চলে তাঁর সংসার। প্রতিদিন কাকডাকা ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত টঙ দোকানে চকলেট, বিস্কুট, বুট, বাদামসহ বিভিন্ন খাবার বিক্রি করে থাকেন। এলাকার ছোট বাচ্চা থেকে বৃদ্ধ সকলে তার দোকানের কাষ্টমার।
দশম শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশোনা হয়েছে তাঁর। মহিউদ্দিন যশোর ঝিকরগাছা উপজেলার ঝিকরগাছা সদর ইউনিয়নের মোবারকপুর গ্রামের মৃত হাবিবুর রহমানের ছেলে। বর্তমানে তিনি শ্যামনগর উপজেলার বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের আবাদচন্ডিপুর এলাকার বনবিবিতলার মির্জাপাড়া এলাকার বাসিন্দা।
পিতা-মাতা হারা মহিউদ্দিন ভাইদের সাথে বনিবনা না হওয়ায় বৈবাহিক কারণে পিত্রালয় ছেড়ে শ্বশুরালায় বসবাস করে সে। শ্বশুরবাড়ির আর্থিক অবস্থাও খুব বেশি ভালো না হওয়ায় সংসারের ঘানি টানতে প্রথমে এলাকায় দিনমজুর হিসেবে কাজ করতেন তিনি। পরে শারীরিক অবস্থা একটু খারাপ হওয়ায় বাড়ির পাশে রাস্তার ধারে ছোট্ট একটি খুবড়ি টঙ দোকানে চকলেট-বিস্কুট-মুড়িসহ বিভিন্ন খাবারের দোকান গড়ে তোলেন তিনি। তাঁর ছোট্ট ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটি শ্যামনগর উপজেলার বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের আবাদচন্ডিপুর বনবিবিতলার এলাকার মির্জা পাড়ার রাস্তার পাশে অবস্থিত।তাঁর দুই ছেলে মেয়ে। ছেলেটা পঞ্চম শ্রেণীতে পড়ে আর ছোট মেয়ের বয়স মাত্র দুই বছর। দুই সন্তান আর স্বামী-স্ত্রীসহ চারজনের সংসারে ভরণ পোষণ হয় এই সামান্য ব্যবসার আয় থেকে। তবে সংসারের খরচ যোগাতে ও মেয়ের লেখা পড়া খরচের সাথে ছেলে মেয়েদের আবদার পূরণে সামান্য আয় থেকে হিমশিম খেতে হয় তাঁর।
মহিউদ্দিন জানায়, আমি এই এলাকায় বিভিন্ন খাদ্য খাবার বিক্রি করে আমার সংসার চালায়। বাকি জীবনও ব্যবসা করতে চাই। এসব বিক্রি করে কোন রকমে বেঁচে থাকতে পারলে আমি খুশি। কষ্ট করে হলেও আমার সন্তানদের মানুষের মত মানুষ করতে চাই। তাদের যেন আমার মত এমন কষ্টকর জীবন-যাপন করতে না হয়। ছেলেকে স্কুলে পড়াচ্ছি। ছোট মেয়েটাকেও পড়াতে চাই।