পঞ্চগড়ে মানুষের মন কেড়ে নিচ্ছে সূর্যমুখী
পঞ্চগড়ে মানুষের মন কেড়ে নিচ্ছে বিশাল ক্ষেতজুড়ে ফুটে থাকা সূর্যমুখী ফুলের নয়নাভিরাম দৃশ্য।
বাসা-বাড়ির ছাদে, আঙিনায় অথবা ফুলবাগানে এতদিন সৌন্দর্য বর্ধন করলেও এবার পঞ্চগড়ে বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে সূর্যমুখী ফুলের।
কৃষি অফিসের প্রণোদনা পেয়ে সূর্যমুখী চাষে ঝুঁকেছেন কৃষক। বাম্পার ফলনও পেয়েছেন তারা। স্বপ্নও দেখছেন লাভবান হওয়ার। কৃষকরা জানান, অন্যান্য ফসলের তুলনায় সূর্যমুখী চাষে খরচের পরিমাণ কম। কিন্তু লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সারি সারি হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা সূর্যমূখীর বাগান যেমন সৌন্দর্য বর্ধন করেছে তেমনি আকৃষ্ট করেছে দর্শনার্থীদের।
কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে পরীক্ষামূলক ভাবে জেলার বিভিন্ন এলাকায় সর্বমোট পাঁচ একর সূর্যমুখী ফুল চাষ করা হয়েছে।
সূর্যমুখী ফুলের বীজ থেকে উন্নতমানের ভোজ্য তেল পাওয়া যায়। যা হৃদরোগীদের জন্য খুবই উপকারী। এছাড়াও খৈল ও জ্বালানীতো থাকছেই। প্রতি মণ বীজ থেকে কমপক্ষে ১৫ লিটার তেল উৎপাদন সম্ভব। এক একর সূর্যমুখী চাষে ১৮-২০ মণ বীজ উৎপাদন হয়। অর্থাৎ প্রতি একরে তেল উৎপাদন হবে ২৭০-৩০০ লিটার। প্রতি লিটার তেলের সর্বনিম্ন বাজার মূল্য ২৫০ টাকা। আর প্রতি একরে খরচ হয় সর্বোচ্চ ১৫ থেকে ১৮ হাজার টাকা।
পঞ্চগড় সদর ইউনিয়নের শিংপাড়া এলাকার কৃষক হারুনুর রশিদ বলেন, ‘আমি প্রায় পাঁচ বছর পূর্বে ব্র্যাক এনজিও’র প্রণোদনায় ৩৩ শতক জমিতে সূর্যমুখী চাষ করে স্বল্প খরচে লাভবান হয়েছি। এবছর এক একর চাষ করেছি ফলনও ভালো হয়েছে।’
সদর উপজেলার হাফিজাবাদ ইউনিয়নের পানিমাছ পুকুরী এলাকার কৃষক মিজানুর রহমান বলেন, ‘কৃষি অফিসের প্রণোদনায় স্বল্প পরিসরে সূর্যমুখী চাষ করেছি। উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শ অনুযায়ী পরিচর্যা করেছি, ফলনও হয়েছে বাম্পার।’
তিনি বলেন, ‘আগামীতে এক একর সূর্যমুখী ফুলের চাষ করবো। আমাকে দেখে এলাকার অনেক কৃষক সূর্যমূখী চাষে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।’
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা আবু হোসেন বলেন, ‘পরীক্ষামুলক ভাবে পঞ্চগড়ে পাঁচ একর জমিতে সূর্যমুখী ফুল চাষ করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত যা দেখা যাচ্ছে তাতে মনে হচ্ছে আমরা ভালো ফলাফল পেতে পারি। কোলেস্টেরল মুক্ত সূর্যমুখী ভোজ্য তেল হিসেবে খুবই উপকারী। যদি এর চাষাবাদ সম্প্রসারণ করা হয় তাহলে আমদানী নির্ভরতা কমিয়ে ভোজ্য তেলের দেশীয় ভাবে উৎপাদন করা সম্ভব হবে।’