ক্যারিয়ার পরিকল্পনা করবেন যেভাবে
সফল ক্যারিয়ার গড়ার জন্য আপনার প্রয়োজন ভালো একটি পরিকল্পনা। এর মাধ্যমে আপনি সহজে প্রস্তুতি নিতে পারবেন।
সফল ক্যারিয়ার গড়ার জন্য আপনার প্রয়োজন ভালো একটি পরিকল্পনা। এর মাধ্যমে আপনি সহজে প্রস্তুতি নিতে পারবেন। ক্যারিয়ার পরিকল্পনা করার ক্ষেত্রে নিজেকে কিছু প্রশ্ন করুন। তাহলে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেবার সময় নিজের কাছে স্পষ্ট থাকতে পারবেন।
ক্যারিয়ার পরিকল্পনা কী?
ক্যারিয়ার পরিকল্পনা বা প্ল্যানিং হলো আপনার ক্যারিয়ার সম্পর্কিত বাস্তবসম্মত একটি কৌশল। এতে অন্তর্ভুক্ত থাকে:
- আপনার পছন্দ বা আগ্রহের কাজ বিষয়ক তথ্য
- আপনার ক্যারিয়ার লক্ষ্য
- আপনার বর্তমান দক্ষতা, জ্ঞান ও কাজের অভিজ্ঞতা
- ক্যারিয়ার লক্ষ্য অর্জনে আপনার করণীয় কাজ
সময়ের সাথে ক্যারিয়ার পরিকল্পনায় পরিবর্তন আসতে পারে। আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে স্কুল-কলেজে পড়া শিক্ষার্থীদের এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবার ক্ষমতা এখনো সীমিত। মূলত টেকনিক্যাল সেক্টরে পড়াশোনা করলে বা বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায় থেকে পরিকল্পনা গ্রহণ করার জন্য কিছুটা হলেও স্বাধীনতা পাওয়া যায়।
ক্যারিয়ার পরিকল্পনা কীভাবে করবেন?
আপনার পরিকল্পনা তৈরি করার সময় নিজেকে এ প্রশ্নগুলো করুন।
ক্যারিয়ার বাছাই ও ব্যক্তিগত আগ্রহ
-
- আপনি কোন ধরনের ক্যারিয়ার চান, তা ঠিক করেছেন কি?
- উত্তর যদি “না” হয়, তাহলে দুশ্চিন্তার কারণ নেই। ক্যারিয়ার ঠিক করার জন্য নির্দিষ্ট কোন সময় নেই।
- আপনার ঠিক করা ক্যারিয়ার ব্যক্তিগত আগ্রহের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ কি?
- উত্তর হওয়া উচিত “হ্যাঁ”। বাছাই করা ক্যারিয়ারে যদি এমন কোন কাজ করতে হয় যা আপনি পছন্দ করেন না, তাহলে সে ক্যারিয়ারে ভালো করা আপনার জন্য কঠিন হয়ে যাবে। যেমন, বেশি মানুষের সাথে কথা বলতে ভালো না লাগলে কাস্টমার সার্ভিসের কাজ ঠিক করা অনুচিত হবে আপনার।
- আমাদের দেশের প্রেক্ষিতে উত্তর “না” হওয়া আশ্চর্যজনক নয়। বেতন, সুযোগ-সুবিধা আর কাজের সুযোগ মাথায় রেখে নিরাপদ কোন ক্যারিয়ার নির্বাচন করা স্বাভাবিক ব্যাপার। যেমন, এখনো সরকারি চাকরির চাহিদা অনেক। আমলাতান্ত্রিক জটিলতা পছন্দ করলেও আপনাকে এক্ষেত্রে যথাসম্ভব ইতিবাচক মানসিকতা পোষণ করতে হবে।
- আপনি কোন ধরনের ক্যারিয়ার চান, তা ঠিক করেছেন কি?
- ক্যারিয়ার বাছাই করার জন্য কারো পরামর্শ নিচ্ছেন কি?
- উত্তর যদি “হ্যাঁ” হয়, তাহলে পরামর্শের মান নিয়ে চিন্তা করুন। যিনি আপনাকে পরামর্শ দিচ্ছেন, তার কাজের ক্ষেত্র আপনার ঠিক করা ক্যারিয়ারের সাথে যায় কিনা, সে ব্যাপারে খেয়াল রাখুন। প্রয়োজনে মেন্টরের সাহায্য নিন।
ক্যারিয়ার বাছাই করার ক্ষেত্রে বিভিন্ন বিষয় জড়িত থাকে। তাই এ সিদ্ধান্ত নেবার সময় সেগুলোর কথা মাথায় রাখুন।
দক্ষতা ও জ্ঞান
- বাছাই করা ক্যারিয়ারের প্রয়োজনীয় জ্ঞান ও দক্ষতা আপনার আছে কি?
- উত্তর যদি “হ্যাঁ” হয়, তাহলে দক্ষতা বাড়ানোর চেষ্টা চালিয়ে যান।
- উত্তর যদি “না” হয়, তাহলে প্রয়োজনীয় জ্ঞান ও দক্ষতার একটি তালিকা তৈরি করুন।
- প্রয়োজনীয় জ্ঞান ও দক্ষতা কীভাবে অর্জন করছেন বা করবেন?
- কোথায় ও কীভাবে আপনার বর্তমান দক্ষতাগুলো অর্জন করেছেন, তার মূল্যায়ন করুন।
- যেসব দক্ষতা আপনার নেই, সেগুলো কীভাবে অর্জন করতে পারবেন, সে সম্পর্কে খোঁজ নিন।
কাজের অভিজ্ঞতা
- বাছাই করা ক্যারিয়ারের সাথে সম্পর্কিত কাজের অভিজ্ঞতা আছে কি?
- উত্তর যদি “হ্যাঁ” হয়, তাহলে নিজের সিভিতে সঠিকভাবে তার উল্লেখ করুন।
- উত্তর যদি “না” হয়, তাহলে কীভাবে সে অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারবেন, তা অনুসন্ধান করুন। এর জন্য চাকরি খোঁজার ওয়েবসাইট ব্যবহার করতে পারেন। অথবা পার্ট-টাইম চাকরির সুযোগ খুঁজুন। সম্ভব হলে ইন্টার্নশিপ করুন।
সিভি ও প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট
- যে ক্যারিয়ারে যেতে চাইছেন, সে ক্যারিয়ারের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ সিভি ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট আছে কি?
- উত্তর যদি “হ্যাঁ” হয়, তাহলে নিজের সিভি রিভিউ করুন।
- উত্তর যদি “না” হয়, তাহলে সময় নিয়ে সিভি, কভার লেটার ও প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট তৈরি করুন।
ইন্টারভিউ
- বাছাই করা ক্যারিয়ারে কোন ধরনের ইন্টারভিউ হয়, সে ব্যাপারে জানা আছে কি?
- উত্তর “না” হলে খোঁজখবর নিন।
- উত্তর “হ্যাঁ” হলে ইন্টারভিউ ও অন্য পরীক্ষা নিয়ে আরো বেশি জানার চেষ্টা করুন।
- ইন্টারভিউ দেবার ক্ষেত্রে আপনি কতটুকু দক্ষ?
- এ প্রশ্নের ভিত্তিতে নিজের মূল্যায়ন করুন।
- যেকোন চাকরির ইন্টারভিউর সাধারণ কয়েকটি প্রশ্নের উত্তর সম্পর্কে প্রস্তুতি নিয়ে রাখুন।
- ইন্টারভিউতে সাধারণ কিছু ভুল এড়িয়ে যাবার উপায় নিয়ে জানুন।
আপনার ক্যারিয়ার পরিকল্পনায় উপরের প্রশ্নগুলো বিবেচনা করলে পুরো প্রক্রিয়া তুলনামূলকভাবে সহজ হয়ে যাবে। এক্ষেত্রে তাড়াহুড়ো করার কিছু নেই। ধৈর্য সহকারে পরিকল্পনার বাস্তবায়ন করলে আপনিও পছন্দের ক্যারিয়ার গড়তে পারবেন।