কবিতা বন্ধু বিদায়, কবি রনজিত মন্ডল।
কবিতা বন্ধু বিদায়।
লেখক রনজিত মন্ডল।
বিদায় বন্ধু বিদায়
আমাকে করিও ক্ষমা;
হৃদয় মাঝে দূঃখ,কষ্ট থাকে যদি জমা।
ধর্মের অজুহাতে-যুধিষ্ঠির দুতক্রীয়াতে
দ্রোন,ভীষ্মের মৌনতার কারণে-
শকুনির অঙ্গুলি হেলনে,
দ্রোপদীর বস্ত্র হরণ হয়।
মাতা কুন্তীর ভুলে, কর্ণ গেছে রসাতলে,
পূত্র প্রেমে ধৃতরাষ্ট্র অন্ধ হয়ে রয়।
শুনে,দাসীপূত্র বিদূরের বাণী-
অনেকেই করে কানাকানি,
অপ্রিয় সত্য কথায় কেউই বিশ্বাসী নয়।
বিদায় বন্ধু বিদায়-
আমাকে করিও ক্ষমা;
হৃদয় মাঝে দূঃখ কষ্ট থাকে যদি জমা।
আপন ভ্রাতা ভেবে যাদের চিনিয়ে দিলাম গুরু;
আমাকে,সর্বহারা করার কার্য
তারাই করল শুরু।
আমাকে,নিস্কাশনের চিন্তাধারায় যারা অতি প্রসন্ন;
তাদের প্রতি রইল আমার একটাই প্রশ্ন:
তাড়াইলে দৌড়াতে হয়,
কথাটা তো মিথ্যা নয়?
ঠিক-
তেমনি ভাবেই আজকে যারা করলে আমায় খুন-
প্রার্থনা করি,
তারা সুখে থাকুন,আমার দ্বিগুন।
বিদায় বন্ধু বিদায়-
আমাকে করিও ক্ষমা;
হৃদয় মাঝে দূঃখ কষ্ট থাকে যদি জমা।
আপন প্রতিবেশী যারা, একইসাথে চলাফেরা
অতি আবেগ প্রবন মন;
ভুলে তাদের ছলনায়,জীবন হল বিষময়-
ধর্মের সম্পর্ক তারা দিল বিসার্জন।
বালক কালে যে গ্ৰামকে ভেবেছি স্বর্গের সিঁড়ি,
সেই গ্ৰামের অধিকাংশই বড়ই দূরাচারী।
অধর্মকে আঁকড়ে ধরে, ধর্মের ধ্বজা বহন করে।
ভিক্ষাবৃত্তির অর্থে- সুদের নতুন সংযোজন।
শকুনির ছত্রছায়ায়-দূর্যোধন পালিত হয়,
তেমনি,গান্ধারে পরিনত মাটি-
হতে পারে না, কখনো খাটি;
এখানে,শকুনির উত্তরসূরী করবে বিচরণ।
বিদায় বন্ধু বিদায়-
আমাকে করিও ক্ষমা;
হৃদয় মাঝে দূঃখ কষ্ট থাকে যদি জমা।
পূর্বপুরুষের হস্তদ্বারা জঙ্গল কেটে আবাদ করা; ভূমিদস্যুর কোপানলে- পিতাকে সর্বশান্ত করে,
অবশিষ্ট ছিল আমার ব্যাস্ত ভিটা খানি।
যেমন–
শকুনির অপকৌশলে-
ধৃতরাষ্ট্রের অত্যাচারে: মৎস্যজীবি রাজ্য ছাড়ে-
তেমনি সংকটাপন্ন ; আমার এ জীবন।
তাই;
জীবন নদীর মধ্যভাগে
অপমানে দুঃখ ক্ষোভে-
হঠাৎ যদি জীবন সূর্য অস্তমিত হয়!
তখন চিন্তা করে আমার কথা-
মনে যদি পাও সামান্য ব্যথা,
সেটাই যে মোর স্বার্থকতা,লুকায়িত রয়।
বিদায় বন্ধু বিদায়-
আমাকে করিও ক্ষমা;
হৃদয় মাঝে দূঃখ,কষ্ট যদিও আছে জমা।।