করোনা ভাইরাস সংক্রমণের ব্যাপকতা বাড়ার কারণে সাধারণ ছুটি বাড়ানো হলেও জরুরি সেবার সব অফিস খুলেছে। প্রশাসনের কেন্দ্রবিন্দু সচিবালয়ে সীমিত পরিসরে লোকবল দিয়ে জরুরি কাজ চলছে।
ছুটিতেও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার বিভাগ, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, কৃষি মন্ত্রণালয়, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা অফিস করছেন।
দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, স্থানীয় সরকার মন্ত্রী ও সচিব, কৃষি মন্ত্রী ও সচিব, মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ও সচিব, প্রাণিসম্পদ সচিব, তথ্যসচিব, সমাজকল্যাণ মন্ত্রী, বাণিজ্য সচিব অফিস করছেন।
দুর্যোগকালীন সহায়তা দিতে সরকারের কাজ অব্যাহত রাখার অংশ হিসেবে কিছু অফিস খোলা রাখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।
এসময় তিনি বলেন, ত্রাণ নিয়ে অনিয়ম এখন নিয়ন্ত্রণে আছে, ত্রাণ নিয়ে কোনো অনিয়ম সহ্য করা হবে না।
কৃষি মন্ত্রণালয় এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, আগে থেকেই মাঠ পর্যায়ের অফিসগুলো খোলা ছিল। এখন মন্ত্রণালয়ের বেশির ভাগ ডেস্কের কর্মকর্তা-কর্মচারী অফিস করছেন।
করোনার কারণে সাধারণ ছুটি আরো ১০ দিন বাড়িয়েছে সরকার। ২৬ এপ্রিল থেকে ৫ মে পর্যন্ত ছুটি বাড়িয়ে বৃহস্পতিবার (২৩ এপ্রিল) আদেশ জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
তবে এ ছুটিতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অধীন দপ্তরসহ ১৮টি মন্ত্রণালয়-বিভাগের দপ্তরসমূহ সীমিত পরিসরে খোলা রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
জনপ্রশাসন সচিব শেখ ইউসুফ হারুন বলেছিলেন, জরুরি সেবায় সব অফিস সীমিত পরিসরে খোলা রাখা যাবে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের আদেশে বলা হয়, দেশব্যাপী করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) মোকাবিলা এবং এর ব্যাপকতা বিস্তার রোধকল্পে অধিকতর সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে সরকার ২৬ এপ্রিল থেকে ৩০ এপ্রিল এবং ৩-৫ মে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে। ওই ছুটির সঙ্গে আগামী ১ ও ২ মের সাপ্তাহিক ছুটিও সংযুক্ত থাকবে।
সাধারণ ছুটি চলাকালীন ঢাকাসহ সব বিভাগ এবং জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগসহ ১৮টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের অধীন দপ্তরসমূহ সীমিত পরিসরে খোলা রাখার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
কৃষি মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, খাদ্য মন্ত্রণালয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ, জননিরাপত্তা বিভাগ, সুরক্ষা সেবা বিভাগ, তথ্য মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার বিভাগ, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগ, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণারয়, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীন দপ্তরসমূহ সীমিত পরিসরে খোলা রাখার কথা বলা হয়।
অন্য সব সরকারি অফিসের কর্মকর্তারা এসময়ে আবশ্যিকভাবে নিজ নিজ কর্মস্থলে অবস্থান করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় খোলা রাখা সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।
তাতে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ২৬ এপ্রিল থেকে সরকারি দাপ্তরিক সময়সূচি অনুযায়ী যথারীতি খোলা থাকবে।
‘প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মহাপরিচালক, প্রকল্প পরিচালক, পরিচালক, উপ-পরিচালক, সহকারী পরিচালক এবং সব উইংয়ের সমপর্যায়ের কর্মকর্তারা নিয়মিত অফিসে উপস্থিত থাকবেন।’
তবে মহাপরিচালক এবং উইং প্রধানদের পর্যালোচনা করে নিজ নিজ উইংয়ের সাপোর্ট স্টাফের প্রতিদিন উপস্থিতি সংখ্যা নির্ধারণ করার নির্দেশনা দিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, উইং বা শাখায় কর্মরত সাপোর্ট স্টাফের ২৫ শতাংশের বেশি না হওয়াই বাঞ্ছনীয়।
গত ৮ মার্চ প্রথম করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী পাওয়ার পর গত ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল এবং পরে ৫-৯ এপ্রিল, পরে ১৪ এপ্রিল এবং সর্বশেষ ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত ছুটি বাড়ানো হয়েছিল। এরপর ৫ মে পর্যন্ত ছুটি বাড়ানো হয়েছে।