তুহিন হোসেন/জিএম মামুন সাতক্ষীরা
সাতক্ষীরায় জেলা পুলিশ সুপার মো. মতিউর রহমান সিদ্দিকীর স্বপদে বহাল রাখার দাবীতে বিক্ষোভ মিছিল, মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন করেছেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্নয়ক ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার(৫ সেপ্টেম্বর) সাতক্ষীরা শহরের খুলনা রোড মোড়স্থ শহীদ আসিফ চত্বর (প্রস্তাবিত) থেকে প্রথমে দফা এক, দাবি এক সাতক্ষীরার এসপি বহাল থাক,আমাদের দাবি মানতে হবে প্রঙ্গাপন বাতিল করতে হবে,সাতক্ষীরার উন্নয়নে, আপনাকে চাই প্রাণপণে, আমাদের সবার ঐক্যমত, সাতক্ষীরাবাসীর ঐক্যমত,মতিউর এসপি বহাল থাক, দূর্নীতিমুক্ত সাতক্ষীরা চাই, মতিউর এসপি ছাড়া বিকল্প নাই। শ্লোগানে শ্লোগানে বিক্ষোভ মিছিল করে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।বিক্ষোভ মিছিলটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিন করে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এসে শেষ হয়।
পরে সাতক্ষীরার এসপি মতিউর রহমান সিদ্দিকী বদলীর প্রজ্ঞাপন বাতিলের দাবিতে ছাত্র জনতার মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিলের ১ দফা ১ দাবি কর্মসূচির লিখিত বক্তব্যে সমন্নয়করা বলেন, সাতক্ষীরাতে আগে পুলিশ উৎশৃঙ্খল জনতা এবং আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের যে অসহনীয় চাঁদাবাজি, দুর্নীতির রেকর্ড ছিল,এসপি মতিউর রহমান সিদ্দিকী আসার পর থেকে সেটা সহনীয় পর্যায়ে নেমে এসেছে।
সাতক্ষীরায় সাবেক এসপি গুলো চোরাকারবারি এবং আওয়ামী সন্ত্রাসী ক্যাডারদের সাথে হাত মিলিয়ে নিজেদের পকেট ভারী করেছেন। মতিউর রহমান সিদ্দিকী আসার পর থেকে এই দূর্নীতির হার কমে এসেছে। আন্দোলনের সময় সারা দেশে যখন লাশের মিছিল চলছিলো, সে সময় সাতক্ষীরার মতো রণভূমিতে একটি লাশও পড়েনি। এসপি মতিউর রহমান সিদ্দিকী নিজে সরেজমিনে মাঠে এসে আমাদের আন্দোলন চালিয়ে যেতে বলেন এবং ছাত্রদের ওপর কোন প্রকার গুলি চালাতে নিষেধ করেন।
এসপি মতিউর রহমান সিদ্দিকী বারবার ওয়ারলেস মাইক্রোফোনে পুলিশদের গুলি চালাতে নিষেধ করেন।বিভাগীয় ডিআইজি এবং আদালতের আদেশ অমান্য করে বারবার তিনি গুলি চালাতে নিষেধ করেন। শহরের এসপি বাংলোর সামনে, থানায় যে সমস্যা হয়েছে, সেটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা এবং পুলিশ আত্মরক্ষার জন্য গুলি চালিয়েছে, এতে এসপির কোনো হাত নেই বলে তাদের লিখিত বক্তব্যে মন্তব্য করেন।
সমন্নয়করা তাদের লিখিত বক্তব্যে আরও বলেন, আন্দোলনের সময়ে সাতক্ষীরার সকল আহতদেরকে এসপি নিজেই তাদের চিকিৎসার খরচ বহন করেছেন এবং তিনি নিজে ছাত্রদের আন্দোলনে সহযোগিতা করেছেন। আমাদের আন্দোলনকে সফল করার জন্য মাইক থেকে শুরু করে সমস্ত প্রকার সহায়তা দিয়েছন। মতিউর রহমান সিদ্দিকী স্যার আন্দোলনের সময় যাতে কোন প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সেজন্য তিনি আমাদের সঙ্গে সব সময় যোগাযোগ রাখতেন। তিনি এই আন্দোলনের পক্ষে ছিলেন। পুলিশবাহিনীকে সুশৃংঙ্খলভাবে নিয়ন্ত্রণ করায় সাতক্ষীরায় কোন ছাত্র-ছাত্রী নিহত হয়নি। এবং তিনি সাতক্ষীরায় আসার পর থেকে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড কমে গিয়েছিল। কোনভাবেই তিনি চোরাকারবারি বা মাদক ব্যবসায়ীদের কে প্রশ্রয় দেননি, যেটা ইতিপূর্বে সাতক্ষীরায় কোন পুলিশ সুপার এমন ভূমিকা রেখেছে কিনা আমাদের জানা নেই। সুতরাং আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার মো. মতিউর রহমান সিদ্দিকীকে কোনভানে অন্যত্র বদলি করতে দেব না। আমরা বর্তমান এমপিকে স্বপদে বহাল রাখার জন্য উপদেষ্টা পরিষদের কাছে জোর দাবী জানাচ্ছি। তা না হলে আগামীকাল থেকে জোরদার আন্দোলন করবো সাধারণ শিক্ষার্থীরা বলে তারা হুশিয়ারি বক্তব্য প্রদান করেন সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত সমন্নয়কেরা।
শেষে সাধারণ শিক্ষার্থী ও জেলার বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্নয়কেরা মানববন্ধন করেন। মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন সাতক্ষীরা জেলার বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাধারণ শিক্ষার্থী এবং ছাত্র প্রতিনিধিরা। ছাত্র সমন্বয়ক নাজমুল হোসেন রনি, নাহিদ হাসান, মোহিনী তাবাসসুম, সাদ্দাম হোসেন, ইব্রাহিম খলিলুল্লাহ, রিফাত হোসেন, সুহাইল মাহদিন সাদি, নাজমুল হোসেন, নুহা আনসারী, রিনা পারভীন এবং সাইফা রুমি প্রমুখ। এছাড়াও জেলার বিভিন্ন উপজেলার সমন্নয়ক ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।