মুজাহিদ শেখ, শ্রীপুর (মাগুরা) প্রতিনিধি : মাগুরার শ্রীপুরে ভূয়া দলিল ও স্ট্যাম্পের মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ কি করেছেন শ্রীপুর উপজেলার করন্দি গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা বিনোদ কুমার বিশ্বাস। এ ঘটনায় তিনি ও তার পরিবারের সদস্যরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলেও জানান তিনি। এ ব্যাপারে একাধিকবার বিভিন্ন জায়গায় অভিযোগ করেও কোন প্রতিকার পাননি মুক্তিযোদ্ধার পরিবারটি।
সরজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বীর মুক্তিযোদ্ধা বিনোদ কুমার বিশ্বাসের সাথে কোদলা গ্রামের রবিউল ইসলামের সাথে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধ চলে আসছিলো। সে ভূয়া দলিল ও স্ট্যাম্পের মাধ্যমে ওই মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের জমি দখলের পায়তারা করে আসছিলো। এতে বাঁধা দেওয়ায় ওই মুক্তিযোদ্ধার উপর একাধিকবার মারধর ও মানহানির ঘটনা ঘটিয়েছে রবিউল ইসলাম। বিনোদ কুমার জানান, রবিউল আমার বাড়িতে এসে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। শুধু বিনোদ কুমার বিশ্বাস না, একই এলাকার ইসলাম মোল্যা, সুবোদ রায়, রামচন্দ্রপুর গ্রামের অনিল বিশ্বাসসহ বেশ কয়েকটি সংখ্যালঘু পরিবারের জমি দখলের পায়তারা করে আসছে রবিউল। মামলার মাধ্যমে তাদের হেনস্তা করলেও অধিকাংশ মামলায় সে পরাজিত হয়েছে। এমন কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ করলেই তাদের হুমকি দেই। তার এমন কর্মকাণ্ডে ভুক্তভোগী পরিবারগুলোও চরম আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে।
বীর মুক্তিযোদ্ধা বিনোদ কুমার বিশ্বাস বলেন, আমি একজন বিহার ট্রেনিং প্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা। আমি বহু কষ্ট করে, সংগ্রাম করে, যুদ্ধ করেছি। অথচ আজকে আমার জীবনের কোন নিরাপত্তা নেই। কোদলা গ্রামের দলিল উদ্দিনের ছেলে রবিউল আমার জমি দখল ও হয়রানী করছে। এমকি হুমকি দিচ্ছে এ দাগ পাবো ও দাগ পাবো। ভূয়া স্ট্যাম্প করে, ভাতিজার ভূয়া এনআইডি করে জমি দখলের পায়তারা করছে। সে আমার উপর নির্যাতন করছে। আমি থানাসহ বিভিন্ন জায়গায় বহু অভিযোগ করেছি। কোন বিচার পাইনি। এইতো আমাদের দেশ। কি করলাম, আর কি পেলাম? রবিউল এই জমিগুলো জোর করে দখল চাচ্ছে। আমি বাঁধা দেওয়াতে আমাকে ৫ বার মারধরসহ মানহানি করেছে। আমি আর কি করবো? নিরুপায় হয়ে গেছি। আমি বোধহয় আর জীবনে কখনো নিরাপত্তা পাবোনা। কোন সময় যেন তারা আমাকে মেরে ফেলে। থানায় অনেকবার সালিশ হয়েছে। জমি আমার তবুও রবিউল এত দুর্ধর্ষ যে সে সালিশ-বিচার কোনো কিছু মানেনা।
এ বিষয়ে আরেক ভুক্তভোগী ইসলাম মোল্যা বলেন, আমার কেনা জমি, আমার দলিল আছে আর সেই জমির উপর রবিউল মামলা করে। আমি বাপের কাছ থেকে কিনেছি। আর উনি না কি ছেলের কাছ থেকে কিনেছে। এই জমি নিয়ে প্রথমে নিম্ম কোর্টে, জজ কোর্টে ও পরে হাই কোর্টে মামলা করে পরাজিত হয়েছে। তার কাজই মানুষের হুমকি দেওয়া, আর মামলা করে হয়রানি করা।
অভিযুক্ত রবিউল ইসলাম বলেন, আমি কারো জমি দখলের চেষ্টা করছি না। আমার বৈধ কাগজপত্র আছে। আর মুক্তিযোদ্ধার মারধর ও মানহানির বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।
অভিযোগ তদন্তকারী কর্মকর্তা শ্রীপুর থানা সাব ইন্সপেক্টর রামপ্রসাদ বলেন, এ বিষয়ে বেশ কয়েকবার মিমাংসার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্ত কোর্টে মামলা থাকায় দু’পক্ষই সময় নিয়েছে।