দীন ইসলাম, রাবি প্রতিনিধি :
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কামরুজ্জামান হল নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) অভিযান পরিচালনা করেছে।
রবিবার (২১ এপ্রিল) দুপুর সাড়ে ১২টায় তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনে প্রবেশ করে। হল নির্মাণ কাজে অনিয়মের অভিযোগের ভিত্তিতে দুদক পরিদর্শনে এসেছে বলে জানান তাদের এক কর্মকর্তা।
প্রশাসন ভবনে প্রবেশের পর তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দপ্তরে মিটিংয়ে বসেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে সেখানে উপস্থিত ছিলেন রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক তারিকুল হাসান, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার শাহরিয়ার রহমান, প্রধান প্রকৌশলী (ভারপ্রাপ্ত) আবুল কালাম আজাদ।
মিটিং শেষে দুদকের সহকারী পরিচালক আমির হোসাইন সাংবাদিকদের বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় নির্মাণাধীন এ.এইচ.এম কামারুজ্জামান হলের অডিটোরিয়ামের ছাদ ভেঙে পড়ে। এবিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের হটলাইন নাম্বারে (১০৬) প্রাপ্ত অভিযোগের প্রেক্ষীতে আমরা এই অভিযানে এসেছি। ভবনটার নির্মাণকাজে কোনো ত্রুটি আছে কিনা পরীক্ষা করার জন্য নিরপেক্ষ প্রকৌশলীসহ আমরা পরিদর্শন করেছি। আমরা কিছু রেকর্ড সংগ্রহ করেছি। রেকর্ডগুলো এবং আমাদের প্রকৌশলীদের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে আমরা কমিশনকে আমাদের সিদ্ধান্ত জানাবো। এরপর কমিশন পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
তিনি আরো বলেন, প্রাথমিকভাবে আমাদের কাছে মনে হচ্ছে, নির্মাণকাজে কিছু অসঙ্গতি রয়েছে। এই ভবনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নির্মাণাধীন অন্যান্য কাজের রেকর্ডও আমরা সংগ্রহ করে দেখবো যে, তাদের কাজ পাওয়ার ক্ষেত্রে কোনো অসঙ্গতি আছে কিনা।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২৪ হাজার বর্গমিটার জায়গা নিয়ে নির্মিত এই হলটি ১০ তলাবিশিষ্ট হবে। ভবনের মধ্যে থাকবে তিনটি ব্লক। প্রায় ১ হাজার আসনবিশিষ্ট এ হলের সব কক্ষই হবে দুই আসন বিশিষ্ট। পুরো ভবনে ৪টি লিফটের ব্যবস্থা থাকবে যার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা ওঠানামা করতে পারবে। প্রতিবন্ধীদের জন্য থাকবে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ৭০ কোটি ২০ লাখ টাকা ব্যয়ে এই হল নির্মাণ করা হচ্ছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মজিদ সন্স কনস্ট্রাকশন এই হলের নির্মাণকাজ করছে।
এর আগে, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্মাণাধীন শহীদ এ এইচ এম কামারুজ্জামান হলের এক অংশের ছাদ গত ৩০ জানুয়ারি ধসে পড়ে। এতে ৯ জন নির্মাণ শ্রমিক আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। সেই রাতেই জরুরি সভা ডেকে ওই ঘটনার কারণ নির্ধারণে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সেসময় তদন্ত করে ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে অনিয়ম পাওয়া গেলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।