করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে উৎপত্তিস্থল চীনের ভূমিকা নিয়ে বরাবরই সমালোচনা করে আসছে যুক্তরাষ্ট্র। করোনা নিয়ে এ পর্যন্ত চীন যেসব তথ্য দিয়ে আসছে তা স্বচ্ছ নয় বলেই মনে করে মার্কিন প্রশাসন।
তবে চীন এবার পাল্টা প্রশ্ন করেছে, চীন নয়, যুক্তরাষ্ট্রের করোনা পরিস্থিতির আসল চিত্র বিশ্ব জানতে চায়। শুধু তাই নয়, যুক্তরাষ্ট্রে করোনা শুরুর সময়কাল, মোট আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে বেইজিংয়ের। রোববার এক মন্তব্য কলামে এসব প্রশ্ন তুলেছে চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম সিনহুয়া। মন্তব্যের শিরোনাম দেয়া হয়েছে-‘যুক্তরাষ্ট্রের করোনা পরিস্থিতির অস্পষ্ট ছবি পরিষ্কার করা হওয়া উচিত’।
মঙ্গলবার প্রকাশিত যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের সান্তা ক্লারা কাউন্টির এক তথ্যের বরাত দিয়ে সিনহুয়া তার মন্তব্যে লিখেছে, ‘যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্তের শুরুর সময়টা বেড়ে গেল। কেননা প্রকাশিত তথ্য বলছে, সান জোস নামের ৫৭ বছর বয়সী এক নারী কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে মারা যান গত ৬ ফেব্রুয়ারি। যা যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্তের ২০ দিন আগের ঘটনা।’
‘শুধু ওই নারীই নয়, ১৭ ফেব্রুয়ারি ৬৯ বছর বয়সী আরও এক ব্যক্তি মারা যান কোভিড-১৯-এ আক্রান্ত হয়ে। অথচ এই দুই ব্যক্তির কোনো তাৎপর্যপূর্ণ ভ্রমণ রেকর্ড নেই। যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকজন বিশেষজ্ঞ বলেছেন, সম্ভবত জানুয়ারির মাঝামাঝি বা জানুয়ারির শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রে কমিউনিটির মাঝে ছড়িয়ে পড়ে এই ভাইরাস।’
সিনহুয়া দাবি করেছে, আসলে কোভিড-১৯ মহামারি আমেরিকানদের ব্যাপকভাবে ভীত করার আগেই জানুয়ারি মাসেই কমন ফ্লু যুক্তরাষ্ট্রে আঘাত করে চলেছিল। তাই করোনাভাইরাসে সেখানে এ পর্যন্ত আসলে কতজন মারা গেছে তা বলাটা কঠিন।
‘যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজেস কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) বিভাগের এক হিসাব মতে, শীত শেষে ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে দেশটিতে অন্তত ২২ মিলিয়ন (২ কোটি ২০ লাখ) মানুষ ফ্লুতে আক্রান্ত হয়েছেন, হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন দুই লাখের বেশি (২ লাখ ১০ হাজার) এবং মারা গেছেন ১২ হাজার। তবে খুব শিগগিরই হোক বা বিলম্বে হোক, প্রকৃত সত্যটা জানা যাবেই। ১১ মার্চ সিডিসির পরিচালক রবার্ট রেডফিল্ড স্বীকার করেন, বেশি কিছু আমেরিকান যারা ইনফ্লুয়েঞ্জায় মারা গেছেন, তাদের মরদেহ পরীক্ষায় কোভিড-১৯ ধরা পড়েছে।’