মুরগির দাম রেকর্ড সৃষ্টি করেছে , বেড়েছে ডিমের দামও।
দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা প্রতিনিধিঃ
সারাদেশের মতো দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার সানন্দবাড়ীতে মুরগির বাজারে অস্থিরতা বিরাজ করছে। সেইসঙ্গে বেড়েছে ডিমের দামও। এতে বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের লোকজন।
শনিবার (২৫মার্চ) দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, খুচরা বাজারে গত সপ্তাহের চেয়ে পাকিস্তানি মুরগি কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে ৩৫০-৩৬০ টাকা, দেশি ৫৪০-৫৫০ টাকা এবং ব্রয়লার ২৫০-২৬০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে, গরুর মাংস গত সপ্তাহের মতোই ৬৭০-৭০০ টাকা এবং ছাগলের মাংস ৯০০-১০০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া পোলট্রি মুরগির ডিমের হালি ৪০-৪২ টাকা থেকে বেড়ে ৪৪-৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সানন্দবাড়ী বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক সহকারী শিক্ষক আলহাজ্ব আজিজুর রহমান
বলেন, সাধারণ মানুষ গরু ও ছাগলের মাংস কেনা কমিয়ে দিয়েছেন। এ কারণে মুরগির ওপর চাপ বেড়েছে। মুরগির খাবারের দাম বৃদ্ধির কারণে বাজারের চাহিদা অনুযায়ী খামারিরা মুরগি সরবরাহ করতে পারছেন না। ফলে মুরগির বাজারও অস্থির হয়ে উঠছে।
কাওনিয়ারচর বাজারে মুরগি কিনতে আসা ফরহাদ হোসেন বলেন, আজকে ২রা রমজান । সেহরিতে মাংসের স্বাদ বলতে আমাদের মতো নিম্ন ও মধ্যবিত্তদের মুরগিতেই ভরসা। কিন্তু যে হারে দাম বেড়েছে তাতে একটা ব্রয়লার বা পাকিস্তানি মুরগি কিনতেই চার থেকে পাঁচশ টাকা চলে যাচ্ছে।
সবজি বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতিকেজি টমেটো গত সপ্তাহের মতো ২৫-৩০ টাকা, গাজর ৩৫-৪০ টাকা, চালকুমড়া ৩০-৪০ টাকা, শসা ৩৫-৪০ টাকা, চিকন বেগুন ৩০-৩৫ টাকা, গোল বেগুন ৩০ টাকা থেকে বেড়ে ৩৫-৪০ টাকা, পেঁপে ২০ টাকা থেকে বেড়ে ৩০-৩৫ টাকা, করলা ৫০-৬০ টাকা, লেবু প্রতিহালি ২০-২৫ টাকা, কাঁচামরিচ ১১০-১৩০ টাকা, শুকনা মরিচ আগের মতোই ৪৫০-৫০০ টাকা, প্রতিপিস লাউ আকারভেদে দাম ৪০-৫০ টাকা, ধনেপাতা ৭০-৮০ টাকা থেকে কমে ৫০-৬০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া কাঁচকলা হালি ২৫-৩০ টাকা, প্রতিকেজি মিষ্টিকুমড়া ৩০-৩৫ টাকা, শিম ২৫-৩০ টাকা থেকে বেড়ে ৩৫-৪০ টাকা, পটল ৫৫-৬০ টাকা, বাঁধাকপি ১৫ টাকা পিস বিক্রি হচ্ছে। আদা আগের মতোই ১৩০-১৪০ টাকা এবং রসুন ১১০-১২০ টাকা থেকে কমে ৮০-১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। বাজারে সবধরনের শাকের আঁটি পাওয়া যাচ্ছে ১০-১৫ টাকায়। সজনে ডাঁটা ১৫০-১৬০ টাকা থেকে কমে ১৩০-১৪০ টাকা, মিষ্টি আলু আগের মতোই ৩৫-৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
খুচরা বাজারে কার্ডিনাল আলু গত সপ্তাহের মতোই ১৫-২০ টাকা, শিল ও ঝাউ আলু ৩০-৩৫ টাকা কেজি দরে পাওয়া যাচ্ছে। দেশি পেঁয়াজ ৪০-৪৫ টাকা এবং আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজ ৩৫-৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
তারাটিয়া বাজারের সবজি বিক্রেতা আলী হোসেন বলেন, সপ্তাহের ব্যবধানে সবজির দাম ব্যপক হেরফের হয়ে গেছে।
১০০ টাকার সজনে এখন ১৫০-২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে । তবে রমজান উপলক্ষে গোল বেগুন ও শসার দাম আরও বাড়তে পারে।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, খুচরা বাজারে এক লিটার বোতলজাত সয়াবিন ১৮৭ টাকা এবং দুই লিটার ৩৭৪ টাকা এবং খোলা সয়াবিন তেল ১৬০-১৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। চালের বাজারে খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, খুচরা বাজারে স্বর্ণা চাল গত সপ্তাহের মতোই ৫০-৫২ টাকা, পাইজাম ৫৪-৫৫ টাকা, বিআর২৮ ৬০-৬৫ টাকা, মিনিকেট ৭৫-৭৮ টাকা ও নাজিরশাইল ৮৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। খুচরা বাজারে খোলা চিনি গত সপ্তাহের মতোই ১১৫-১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্যাকেট আটা ৬৫ টাকা ও খোলা আটা ৫৮-৬০ টাকা, ছোলা বুটের দাম ৫-১০ টাকা কমে ৯০-৯৫ টাকা এবং প্যাকেট ময়দা ৭৮-৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে আগের মতোই মাঝারি মসুর ডাল ১১০-১২০ টাকা, চিকন মসুর ডাল ১৩০-১৪০ টাকা, মুগডাল ১৪০-১৫০ টাকা এবং বুটের ডাল ৯৫-১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এদিকে, মাছের বাজার ঘুরে দেখা যায়, আকারভেদে রুই মাছ ৩০০-৩৫০ টাকা, মৃগেল ২৫০-৩০০ টাকা, পাঙাশ ১৭০-২০০ টাকা, তেলাপিয়া ১৪০-১৬০, কাতলা ৪০০-৪৫০ টাকা, বাটা ১৬০-২০০ টাকা, শিং ৩০০-৪০০ টাকা, সিলভার কার্প ১৫০-২৫০ টাকা এবং গছিমাছ ৬০০-৬৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
দাম বৃদ্ধির বিষয়ে ২নং চরআমখাওয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জিয়াউল ইসলাম জানান, আমি রমজানের শুরুতেই প্রতিটা অলিতে গলিতে ঘুরে সব দোকানিদের সাথে কথা বলছি, হুট করে কেও যেন দ্রব্যমূল্যের দাম বৃদ্ধি না করে।