বিশেষ প্রতিনিধিঃ
সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার আটুলিয়া সোহরাবিয়া দাখিল মাদ্রাসায় নিয়োগ পরীক্ষার আগেই দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে পরীক্ষায় আবেদনকারী ৬ ছয় জন সহ ম্যানেজিং কমিটির দুই অভিভাবক সদস্য সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক সহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগ উঠেছে, মাদ্রাসাটির সুপার মোহাম্মদ আশরাফ হোসাইন এবং ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি জিএম আলতাব হোসেন লাভলুর যোগসাজশে সরকারি সুপার, নৈশ প্রহরী ও আয়া তিন পদে নিয়োগে শুরু থেকেই দুর্নীতির আশ্রয় নেয়া হচ্ছে। তিন পদ চূড়ান্ত করে নিয়োগ পরীক্ষায় কে কে চাকরি পাচ্ছেন তা এলাকার ছড়িয়ে পড়েছে। সূত্রের তথ্য অনুযায়ী আগামী ০৮ জুন অনুষ্ঠিতব্য সাজানো নিয়োগ পরীক্ষায় সহ সুপার পদে মাওলানা ফারুক হোসাইন, আয়া পদে সুমাইয়া আফরিন সুমি ও নৈশ প্রহরী পদে নিয়োগ পাচ্ছেন সাইফুল ইসলাম সোহাগ নামে এক ব্যক্তি। সুমাইয়া আফরিন সুমি মাদ্রাসাটির সভাপতি জিএম আলতাব হোসেনের সম্পর্কে ভাগনী। এছাড়া নৈশ প্রহরী পদে পূর্ব নির্ধারিত সাইফুল ইসলাম সোহাগের কাছ থেকে কয়েক লাখ টাকা উৎকোচ নেয়া হয়েছে। প্রার্থী নির্দিষ্ট করার পরে পাতানো নিয়োগ পরীক্ষা বন্ধের জন্য সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক, মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড সহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেছেন নিয়োগ পরীক্ষায় আবেদনকারী ৬ জন ও ম্যানেজিং কমিটির দুই অভিভাবক সদস্য।
মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির দাতা সদস্য জি,এম মতিয়ার রহমান জানান,
আটুলিয়া সোহরাবিয়া দাখিল মাদ্রাসায় নিয়োগ পরীক্ষায় দূর্নীতির অভিযোগে পরীক্ষায় আবেদনকারী ৬ জন ও অভিভাবক সদস্য মোঃ নবাব আলী এবং আমি দাতা সদস্য জি এম মতিয়ার রহমান সাতক্ষীরার মান্যবর জেলা প্রশাসক,মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড সহ বিভিন্ন দপ্তরে এই দূর্নীতিপূর্ন নিয়োগ বন্ধের আবেদন করেছি। মাদ্রাসায় তিনটি পদে সহ সুপার ফারুক হোসেন,নৈশ প্রহরী পদে সাইফুল ইসলাম সোহাগ ও আয়া পদে সুমাইয়া আফরিন সুমিকে নিয়োগ দেওয়ার জন্য ২০ লাখ টাকা লেনদেন সহ চূড়ান্ত হয়েছে। যে কারনে বারবার বাধা বিপত্তির পরও কমিটির শেষ মেয়াদে এসে নিয়োগ দিয়ে টাকাগুলি হালাল করতে চায় সুপার আশরাফ হোসাইন ও সভাপতি আলতাব হোসেন। এ নিয়োগ বানিজ্যের বিরুদ্ধে শ্যামনগর সহকারী জজ আদালতে দেওয়ানী ১০২/২৪ মামলা চলমান। মামলার বাদী আয়া পদে আবেদনকারী রেশমা খাতুন। একই আদালতে অভিভাবক সদস্য মোঃ নবাব আলী আরো একটি মামলা করেন। মামলা নং ১১৪/২৪
মাদ্রাসা সুপার মাওলানা আশরাফ হোসাইন জানান, সরকারি বিধি মোতাবেক নিয়োগ পরীক্ষা হবে। এখানে কোন দুর্নীতি করার সুযোগ নেই। যে দুজনকে চূড়ান্ত নিয়োগ দেয়া হচ্ছে এরা যদি মেধা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয় তাহলে,ত আমাদের কিছু করার নেই। প্রতিষ্ঠানের নেতৃত্ব নিয়ে ভূমিদাতা পরিবারের সদস্যদের মধ্যে বিরোধ আছে। এ নিয়ে আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে।
ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি জি,এম আলতাব হোসেন জানান, সরকারি নিয়ম নীতি মেনেই নিয়োগ পরীক্ষা হচ্ছে। কোন প্রার্থীর কাছ থেকে টাকা গ্রহণ করা হয়নি। এই নিয়োগ নিয়ে দীর্ঘদিন ষড়যন্ত্র চলছে। কয়েকবার নিয়োগ পরীক্ষা বন্ধ করা হয়েছে। মাদ্রাসা সুপারের বক্তব্যের সাথে মিল রেখে তিনিও বলেন, নিয়োগ পরীক্ষায় যাদের নিয়ে অভিযোগ উঠেছে তারা যদি উত্তীর্ণ হয় তাহলে,ত আমাদের কিছু করার নেই। নিয়োগ বোর্ডে সরকারি প্রতিনিধি থাকবেন সবকিছু নিয়ম অনুযায়ী হবে।
প্রতিষ্ঠানে ভূমিদাতা পরিবারের সদস্য স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আবু সালেহ বাবু জানান, আমার দাদা আলহাজ্ব সোহরাব হোসেন মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠার জন্য জমি দান করেছিলেন। আমি এই মাদ্রাসার উন্নতি চাই। তবে দুর্নীতির মাধ্যমে লাখ লাখ টাকার বিনিময়ে কর্মচারী নিয়োগের পাঁয়তারা চলছে। এতে ব্যক্তি বিশেষ লাভবান হলেও প্রতিষ্ঠানের কোন লাভ হচ্ছে না। ইতিমধ্যে কয়েকবার নিয়োগ পরীক্ষা বন্ধ করা হয়েছে। যাদের নিয়ে অভিযোগ উঠেছে তারা যদি নিয়োগ পান তাহলে দুর্নীতির অভিযোগ সত্য বলে প্রমাণিত হবে।