জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থাপিত ‘অঞ্জলি লহ মোর’ ভাস্কর্যটি ভেঙে ফেলা হয়েছে। ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে উদ্বোধন হওয়া এই ভাস্কর্যটি কবির একটি গানের নামানুসারে তৈরি হয়েছিল এবং এটি স্থাপন করা হয় বিজ্ঞান ও প্রকৌশল অনুষদ ও পুরাতন কলা অনুষদ ভবনের মাঝখানের পুকুরপাড়ে।বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, চার কোটির বেশি ব্যয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ পুকুর গুলোর সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ শুরু হয়। এর অংশ হিসেবেই নির্মিত হয় ‘অঞ্জলি লহ মোর’ ভাস্কর্যটি। তবে ৫ আগস্ট প্রশাসনিক পট পরিবর্তনের পরেই বিক্ষুদ্ধ জনতা এই দুটি হাতের ভাস্কর্যের আঙুল ভেঙে ফেলেছিল। এরপর থেকেই এই ভাস্কর্যটি প্রশাসনিক ভাবে ভেঙে ফেলার দাবি উঠেছিল। তার পরিপ্রেক্ষিতে নতুন প্রশাসন ১৭ জুন (মঙ্গলবার), বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান ও কলা অনুষদের সামনের পুকুরে স্থাপিত ভাস্কর্যটি ভেঙে ফেলা হয়। জানা যায়, প্রতিহিংসার জেরে সাবেক ভিসি অধ্যাপক সৌমিত্র শেখরের নির্দেশে সবুজ গাছপালায় আচ্ছাদিত ঘেরা জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের স্মৃতিবিজড়িত ঘরটি ভেঙে ফেলে সেখানে তৈরি করা হয় অঞ্জলি লহ মোর ভাষ্কর্য। এই ভাস্কর্য তৈরির প্লানিং পরিবর্তন করে নিজের মতো করে তৈরি করেন তৎকালীন উপাচার্য। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ফ্যাসিবাদী আওয়ামী সরকারের পতন হলে শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে সৌমিত্র শেখরের পতনের পর বেশকিছুদিন ধরেই ভাষ্কর্যটির বিরোধিতা করে আসছিল শিক্ষার্থীরা। এরই জেরে শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদের মুখে ভেঙে ফেলা হয় ভাষ্কর্যটি।এলজিইউডি বিভাগের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান বলেন, এখানে সৃষ্টি সুখের উল্লাসে মেতে আছে ডিপিডি হাফিজ আর পরিকল্পনা দপ্তর। বিশ্ববিদ্যালয়ের পুকুর থেকে শুরু করে রাস্তা, ড্রেন, ভবন উনারা নিজে হাতে বারবার সৃষ্টি করল আবার ধ্বংস করল। প্রতিবার ভিসি হিসেবে নতুন মাস্টার আসলে মাস্টার প্লান চেঞ্জ হয়। কিন্তু আমার মনে হয়, ‘অঞ্জলি লহ মোর’–এর ক্ষেত্রে এসব কোনো দিকই বিবেচনা করা হয়নি। অনেকে দেখছি নজরুলের গানের সাথে ভাস্কর্যটির সামঞ্জস্য খুঁজতে চাচ্ছেন। কিন্তু এটা কি হতে পারে না যে, ভাস্কর্যটি টিকিয়ে রাখার জন্যই এর নাম ‘অঞ্জলি লহ মোর’ দেওয়া হয়েছিল? ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী সৌখিন আহমেদ বলেন, পুরাতন কলা ও বিজ্ঞান ভবনের মিলিত স্থানে আগে একটি পুকুরঘাট ছিল, যেখানে বসার ব্যবস্থা ছিল। তা ভেঙে সৌমিত্র শেখর তার সময়কালে তৈরি করলেন অঞ্জলি লহ মোর নামের ম্যুরালটি। নজরুল এর কর্ম তুলে ধরার একটি প্রয়াস এটি। মৃদু স্বরে সাউন্ড সিস্টেমে সেখানে গান বাজার কথা, জানামতে সেটারও বাজেট হয়েছে। এখন ভেঙে ফেলা হচ্ছে সেই ম্যুরালটি। তাও এমন সযয়ে যখন শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে নেই তখন। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি অলিখিত নিয়ম হলো ছুটি চলাকালীন সময়ে সেই কাজগুলো করে