মো:শরিফুলইসলাম,নরসিংদী প্রতিনিধি: জিবিকা যুদ্ধের এক জীবন্ত সৈনিক ফেরিওয়ালা মোস্তফা আলি। তার নেশা ফেরি করা। এ পেশা তার পৈতৃক সুত্রে পাওয়া। পিতা মজলিস আলিও এ ব্যবসা করতে করতে জীবন কাটিয়েছেন। সাকিন নরসিংদীর ঘোড়াশাল পৌর এলেকার পাইকসা গ্রাম। দাঁড়ি মুছে ঢাকা মুখখানায় ক্লান্তির ছাপ নেই। নানা পণ্যে সাজিয়ে ভ্যান গাড়ি ঠেলে চলছেন সারাদিন। আজ এ গ্রামে তো কাল ঐ গ্রামে এভাবেই চলছে তার ভ্রাম্যমান ব্যবসা।
মোস্তফার এই ফেরিওয়ালা ব্যবসার বয়স কুড়ি বছর। ব্যবসার অবিরাম এই পথ চলাই যেন তার এক ভিন্ন রকম আনন্দ। রক্তের সাথে মিশে গেছে নিত্য ঘাম ঝরা মেহনত। সকালের নাস্তা সেরে বেরিয়ে পরেন বেঁচা বিক্রির গন্তব্যে। সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরে হিসাবপত্র শেষে দেরী না করে রাতে ঘুমিয়ে পরেন, সাজ সকালে ফেরি করার দাগিতে। সপ্তাহে প্রতি শুক্রবার পাইকারীতে মালামাল কিনেন নরসিংদী থেকে।
গৃহস্তালির কাজে ব্যবহৃত হরেক রকম পণ্যে বোঝাই মোস্তফার ভ্যান গাড়ি। গৃহকর্মের প্রয়োজনীয় টুকিটাকি সব ধনের জিনিসপত্রই সংগ্রহে নিয়েছেন। তার ছোট মাইকে হাকছেন জিনিসপত্রের নাম। পথে পথে ঘুরছেন আর বাড়ির কাছে গিয়ে থামছেন। মাইকে বর্ননা চলছে পণ্য সামগ্রীর নাম।
মোস্তফা আলির সাথে পাইকসা রাধাকুঞ্জের মেলায় সাক্ষাতে জানতে চাইলে তার ফেরিওয়ালা ব্যবসা সম্পর্কে, তিনি জানান ছেলে মেয়েদের বরন পোষণ চালাতেই এই ব্যবসাকে বেছে নিয়েছেন। তিনি আরো জানান, বিভিন্ন স্থানে মেলা হলে সেখানে যান। মেলায় বেঁচাবিক্রি খুব ভালো হয়। তাছাড়া ঈদ উৎসবের সময় তিনি ঘোড়াশাল রেলওয়ে ষ্টেশনে তার ফেরি ভ্যানগাড়ি নিয়ে হাজির থাকেন। এখানে ভালো বেঁচাবিক্রি হয়।
মোস্তফা আলি একজন ষাটোর্ধ্ব বয়স্ক হলেও পরিশ্রমী জীবন-সংগ্রামী মানুষ। সৎ পথে লড়ছেন তার পরিবারের জন্য। ফেরিওয়ালা ব্যবসাটি তার কাছে এবাদতের মতোই মনে করেন। নিত্যদিন তিনি বিরামহীন ছুটছেন তার সাজানো ফেরি ভ্যানগাড়ি নিয়ে পথে প্রান্তরে গঞ্জে মেলায়। তার একটি আবেদন সরকার বা কোন ধনার্ঢ্য ব্যাক্তি যদি একটি দোকান করে দেয়, তবে বাকি জীবনটুকো পরিবারসহ ধর্মকর্ম করে কাটিয়ে দেয়া সহজ হতো। আমি দেশ ও সমাজের মধ্যে জীবন কাটাতে শান্তির পথ খুঁজে পেতাম।