সরকারের প্রকাশিত পরিসংখ্যান অনুযায়ী বাংলাদেশে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর চেয়ে সুস্থ হওয়া রোগীদের সংখ্যা কম। বিশ্বের অনেক দেশে চিত্রটা উল্টো। তবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে সুস্থ হওয়া সব রোগীদের তথ্য পরিসংখ্যানে দেয়া হয় না। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোববারের ব্রিফিং অনুযায়ী এখন পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ১২২ জন। অন্যদিকে মারা গেছেন ১৪৫ জন। বিশ্বের অনেক দেশেই করোনায় মৃত্যুবরণকারীদের চেয়ে সুস্থ হওয়ার সংখ্যাই বেশি।
কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত দেশগুলোর মধ্যে শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে দেয়া তথ্য অনুযায়ী দেশটিতে মোট ৫৩ হাজার ৯৩৪ জন মারা গেছেন। অন্যদিকে সুস্থ হয়েছেন এক লাখ পাঁচ হাজার ৮১৮ জন। স্পেনে মারা গেছেন ২২ হাজার ৯০২ জন আর সুস্থ হয়েছেন ৯৫ হাজার ৭০৮ জন। কম বেশি একই চিত্র ইটালি, ফ্রান্স কিংবা জার্মানিতেও।
এমনকি বাংলাদেশের প্রতিবেশি দেশগুলোতেও এখন মৃত্যুর চেয়ে সুস্থ হওয়ার সংখ্যা বেশি। ভারতে আক্রান্ত প্রায় সাড়ে ২৬ হাজারের মধ্যে ৮২৫ জন মারা গেছেন। সংক্রমণমুক্ত হয়েছেন পাঁচ হাজার ৯৩৯ জন। পাকিস্তানে ২৬৯ জনের মৃত্যুর বিপরীতে আরোগ্য লাভ করেছেন দুই হাজার ৮৬৬ জন। তবে ওপরের সবগুলো দেশেই করোনা সংক্রমণ ধরা পড়েছে বাংলাদেশের আগে।
বেশ কয়েকটি দেশের পরিসংখ্যানে অবশ্য বাংলাদেশের মত চিত্রও রয়েছে। যেমন, নরওয়েতে ২০১ জন মারা গেছেন এখন পর্যন্ত। অন্যদিকে সুস্থ হয়েছেন ৩২ জন। সুইডেনে দুই হাজার ১৯২ জন মারা গেছেন কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে৷ জনস হপকিন্সের তথ্য অনুযায়ী, দেশটিতে সুস্থ হয়েছেন এর অর্ধেক।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ব্যাখ্যা
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর করোনা ভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ে তাদের নিয়মিত অনলাইন ব্রিফিংয়ে আক্রান্ত ও মৃত্যুর পরিসংখ্যানের পাশাপাশি কতজন সুস্থ হয়েছেন সেই তথ্যও তুলে ধরে। রোববারের তথ্য অনুযায়ী সবশেষ ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমণমুক্ত হয়েছেন নয়জন। সব মিলিয়ে সুস্থ হওয়ার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১২২ জনে। সুস্থ হওয়াদের তুলনায় মৃত্যুর সংখ্যা কেন বেশি এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন। তবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে যারা হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে যান পরিসংখ্যানে শুধু তাদের তথ্যই যুক্ত করা হয়।
রোববার অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক নাসিমা সুলতানা বলেন,‘আমরা এই যে সুস্থতা দেখাই এই নয়জন (২৪ ঘণ্টায় সুস্থ) তারা হাসপাতালে থেকে যারা চিকিৎসা নিচ্ছিলেন, তাদের মধ্যে সুস্থ৷ আমাদের বেশিরভাগ আক্রান্ত ব্যক্তি বাড়িতে থেকেই চিকিৎসা নেন এবং তারা সুস্থ হয়ে যান। সেই তথ্যটা আমরা এখানে দেই না৷ আমরা শুধু যারা হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে যান তাদের তথ্যটাই দেই।’
দশ বছরের কম বয়সী শিশুর মৃত্যু
এদিকে রোববার করোনায় আক্রান্ত নতুন পাঁচজনের মৃত্যুর তথ্য জানানো হয়েছে। এদের মধ্যে একটি শিশুও রয়েছে। তার বয়স দশ বছরেরও কম। শিশুটি কিডনিজনিত রোগে ভুগছিল। নাসিমা সুলতানা বলেন,‘তার নেফ্রোটিক সিনড্রোম নামের একটা অসুস্থতা ছিল যেটা একটা কিডনির সমস্যা। তারপরে তার কোভিড পজিটিভ ধরা পড়েছে এবং সে মৃত্যুবরণ করেছে।’
মৃত্যুবরণ করা বাকিদের বয়স ছিল পঞ্চাশের উপরে। সূত্র : ডয়চে ভেলে