দীন ইসলাম, রাবি প্রতিবেদক
মঙ্গলবার (০৫ ফেব্রুয়ারি) ফেসবুকে ‘জেনারেল ম্যানেজার-ওয়েস্ট বাংলাদেশ রেলওয়ে’ নামের একটি পেজ থেকে দাবি করা হয়, কারিগরি ত্রুটির কারণে ধুমকেতু এক্সপ্রেস ট্রেন রাজশাহীতে পৌছাতে দেরী হয়। ট্রেনে থাকা ভর্তি পরীক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে রাবি উপাচার্যের সঙ্গে যোগাযোগ করে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। অনুরোধ করা হয়, শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছাতে কিছুটা দেরী হলেও যেন তাদের প্রবেশ করতে দেওয়া হয়। কথা রাখেন উপাচার্য।
এবিষয়ে বুধবার ‘এ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা বিষয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেন, তথ্যটি সঠিক। মানবিক দিক বিবেচনায় আমরা পরীক্ষার্থীদের কেন্দ্রে প্রবেশের সুযোগ দিয়েছি। নিয়মানুযায়ী পরীক্ষা শুরুর ১৫ মিনিট পরে কেন্দ্রে কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়না। বিলম্বে ছাড়া এবং পথিমধ্যে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে ট্রেনটির পৌঁছাতে বিলম্ব হয়। তাই, ওই ট্রেনের আনুমানিক ১২৫ জন শিক্ষার্থীকে আমরা কেন্দ্রে প্রবেশের সুযোগ দিয়েছি। তাদের প্রায় ২০ মিনিট মত দেরী হয়েছিল। তবে, তাদেরকে অতিরিক্ত সময় দেওয়া হয়নি।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মো. সুলতান-উল-ইসলাম, উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক মো. হুমায়ুন কবীর, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. অবায়দুর রহমান প্রামানিক, ‘এ’ ইউনিটের প্রধান সমন্বয়কারী ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের অধিকর্তা অধ্যাপক মো. একরাম উল্যাহ, রেজিস্ট্রার অধ্যাপক মো. তারিকুল হাসান, প্রক্টর অধ্যাপক মো. আসাবুল হক, ছাত্র-উপদেষ্টা অধ্যাপক মো. জাহাঙ্গীর আলম সাউদ, জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক অধ্যাপক প্রদীপ কুমার পাণ্ডে, আইসিটি সেন্টারের পরিচালক অধ্যাপক মো. খাদেমুল ইসলাম মোল্যা উপস্থিত ছিলেন।
‘জেনারেল ম্যানেজার-ওয়েস্ট বাংলাদেশ রেলওয়ে’ নামের পেজের এক পোস্টে বলা হয়েছে, ‘প্রায় ৭০০ ছাত্র- ছাত্রী আজকে (মঙ্গলবার) ধুমকেতু এক্সপ্রেস ট্রেনে ঢাকা থেকে এসে বিকেল সাড়ে তিনটার ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবেন। রেল ব্রোকেনের জন্য ধুমকেতু এক্সপ্রেস ঢাকা থেকেই বিলম্বে রওনা হয়। সকাল ১১ টায় হিসেব করে দেখা গেল ট্রেনটি বিকেল ৩:০০ টা নাগাদ রাজশাহী পৌঁছবে। পরীক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে ট্রেনটি অন্য ট্রেনকে বসিয়ে দিয়ে এগিয়ে আনছিলাম। ভাগ্য এতই খারাপ, লাহেড়ী মোহনপুর স্টেশনে এসে ধূমকেতুর ইঞ্জিন ফেইল করে, চাকা ঘুরছে না। কি করা যায়, কি করা যায়।’
‘পরীক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে শরৎনগরে বসা চিলাহাটি এক্সপ্রেস ট্রেনের ইঞ্জিন কেটে এনে ধুমকেতু আবার চালু করলাম। হিসেবে করে দেখলাম ট্রেনটি বিকেল ৪ ঘটিকায় রাজশাহী পৌঁছবে, তখন পরীক্ষা শুরু হয়ে যাবে। মাননীয় ভিসি মহোদয়কে পরীক্ষার সময় পিছিনোর বিনীত অনুরোধ করলাম। তিনি আমাকে প্রায় ৪ বার ফোন করে ট্রেনের খবর নিলেন। ট্রেন সর্বোচ্চ অনুমোদিত গতিতে চলছে। দূশ্চিন্তা ছাড়ছে না। পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। উপায়ন্ত না দেখে আড়ানী স্টেশনের স্টপেজে ট্রেন না থামিয়ে থ্রু পাশ করলাম। ঈশ্বরকে খুব একটা ডাকি না, পরীক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে জোড়ে জোড়ে ডাকা শুরু করলাম, একটু মানত ও করলাম। ঈশ্বর মনে হয় সদয় হলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় স্টেশনে ট্রেন থামিয়ে দিলাম, তখন বিকেল ৩/৩৮ ঘটিকা। দৌড় দৌড় হলে ঢুকতে হবে ৪ টার মধ্যে। ভিসি মহোদয়কে বিনীত অনুরোধ করলাম ছেলে মেয়েদের হলে ঢোকার সুযোগ দেয়ার জন্য। তিনি কথা রাখলেন এবং রেলওয়ের সবাইকে ধন্যবাদ দিলেন। ট্রেন পরিচালনায় পাকশী কন্ট্রোলে সার্বক্ষনিক ভাবে মনিটরিং করেন ডিআরএম(পাকশী)। এখন নিজেকে বেশ হালকা লাগছে।’