পদ্মা-যমুনায় প্রকাশ্যে চাঁদাবাজি-ছিনতাই, আতঙ্কে নৌযান শ্রমিকরা

মানিকগঞ্জের শিবালয় ও দৌলতপুর উপজেলার পদ্মা এবং যমুনা নদীপথ যেন এখন জলদস্যুদের দখলে। প্রতিদিন শতাধিক বালুবোঝাই বাল্কহেড ও পণ্যবাহী নৌযান আটকিয়ে প্রকাশ্যে চাঁদাবাজি ও ছিনতাই চালাচ্ছে একটি সংঘবদ্ধ চক্র। চাঁদা না দিলে চালক ও হেলপারদের মারধরের অভিযোগও পাওয়া যাচ্ছে। ফলে দিনদিন এই নদীপথ হয়ে উঠছে ঝুঁকিপূর্ণ ও আতঙ্কজনক।জানা যায়, সিরাজগঞ্জসহ আশপাশের জেলা থেকে প্রতিদিনই বালুবোঝাই বাল্কহেড যোগে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বালু সরবরাহ করা হয়। এই রুটে চলাচলকারী নৌযানগুলোই এখন জলদস্যুদের প্রধান নিশানা। শিবালয় উপজেলার আলোকদিয়া এবং দৌলতপুর উপজেলার কিছু দুর্বৃত্ত প্রতিদিন ৬ থেকে ৮টি ইঞ্জিনচালিত নৌকায় করে নদীতে নামে। প্রতিটি নৌকায় থাকে ১০ থেকে ১২ জন স্বশস্ত্র ব্যক্তি। যারা আগ্নেয়াস্ত্র, রামদা, হাসুয়া ও লাঠিসোটা নিয়ে বাল্কহেড থামিয়ে চালকদের কাছ থেকে জোরপূর্বক টাকা আদায় করে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকটি বাল্কহেডের শুকানি বলেন, সিরাজগঞ্জ থেকে বালুবোঝাই বাল্কহেড নিয়ে নিয়মিত ঢাকায় যেতে হয়। পদ্মা যমুনার শিবালয় ও দৌলতপুর এরিয়ায় ঢুকলেই কয়েকটি ইঞ্জিনচালিত নৌকায় করে কয়েকজন অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে বাল্কহেডে ওঠে পড়ে। তারা ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা চাঁদা দাবি করে। চাঁদা না দিলে স্টাফদের নিকট থাকা মানিব্যাগ ছিনিয়ে নেয় এবং তাদের বেধড়ক মারধর করে।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, এসব জলদস্যুদের বিরুদ্ধে আগে থেকে প্রশাসন অবগত থাকলেও এখন পর্যন্ত কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ফলে নৌপথে চলাচলকারী শ্রমিক ও ব্যবসায়ীরা প্রতিনিয়ত আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন।

এ বিষয়ে পাটুরিয়া নৌ পুলিশের ওসি কেএম নজরুল ইসলাম বলেন, সম্প্রতি এমন অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করে ৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তবে নতুন করে এখন পর্যন্ত কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে শিবালয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামাল হোসেন বলেন, নদীতে চাঁদাবাজির বিষয়টি নজরে এসেছে। ইতোমধ্যে একটি টিম চাদাঁবাজদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালাচ্ছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নদীপথে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে যে কোনো সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের অঘটন।