স্টাফ রিপোর্টার – নওগাঁ :নওগাঁয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠদান ফাঁকি দিয়ে চাকুরিবিধি লংঘন করে দাম্ভিকতার সাথে সাংবাদিকতার আড়ালে অনৈতিক সুবিধা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে জেলার রাণীনগর উপজেলার বাঁশবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক তন্ময় ভৌমিকের বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে অভিযোগের প্রেক্ষিতে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার নিদের্শে অভিযোগের তদন্ত করছে রাণীনগর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস।
নওগাঁ শহরের চকএনায়েত এলাকার এ কে এম নজমুল হকের ছেলে এ বিএম নাশরাত জাহান কাদির মুন্না জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের নিকট গত ৮ আগষ্ট লিখিত অভিযোগে বলেন, জেলার রাণীনগর উপজেলার বাঁশবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক তন্ময় ভৌমিক সরকারি চাকুরির পাশাপাশি বিদ্যালয়ে অধিকাংশ সময়ে পাঠদান ফাঁকি দিয়ে চাকুরি বিধি লংঘন করে একই সাথে বেসরকারি টিভি চ্যানেল(একাত্তর টিভি) ও একটি জাতীয় পত্রিকা( দৈনিক ইত্তেফাক) পত্রিকার নওগাঁ জেলা প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করছেন। তিনি একাত্তর টিভি ও দৈনিক ইত্তেফাকে কাজ করায় দাপটে জেলায় তিনি এক মূর্তিমান আতংক। তিনি সাংবাদিকতার আড়ালে চাঁদাবাজি এবং সুবিধা না পেলেই মিথ্যা ও বিভ্রান্তীকর সংবাদ প্রকাশ করে হয়রানিমুলক তৎপড়তায় লিপ্ত থাকেন। তিনি তার বিদ্যালয়ে পাঠদান ফাঁকি দিয়ে সারাদিন সাংবাদিকতার নামে বিভিন্ন অফিস আদালত ও বিভিন্ন৷ স্থানে সময় অতিবাহিত করেন । চাঁদাবাজি যেন তার আয়ের প্রধান উৎস। তবে সপ্তাহ শেষে প্রধান শিক্ষকসহ সংশ্লিষ্টদের ওপর সাংবাদিকতার ভয় দেখিয়ে ও প্রভাব খাটিয়ে হাজিরা খাতায় নিয়মিত উপস্থিতির সাক্ষর করেন। তিনি একজন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক হয়ে ইতোমধ্যে নওগাঁ শহরে প্লাট বাড়ি সহ অনেক কিছুই করেছেন।
এ বিএম নাশরাত জাহান কাদির মুন্না অভিযোগে প্রশ্ন করেন , সরকারি চাকুরি ও একই সাথে সাংবাদিকতা করা যায়কি? যদি করা না যায় তাহলে তিনি সরকারি চাকুরি বিধি উপেক্ষা করে সাংবাদিকতার আড়ালে অনৈতিক সুবিধা আদায় করে সাংবাদিকতা পেশাকে কুলশিত করছেন।জাতির এই পরিবর্তিত সময়ে তার ব্যবস্থা না হলে কোন দিনই তার ব্যবস্থা হবেনা।
এ পর্যন্ত সরকারি কোষাগার থেকে সহকারি শিক্ষকের যে অর্থ উত্তোলন করেছেন তা ফেরত প্রদান এ বিষয়ে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের আবেদন করেন এ বিএম নাশরাত জাহান কাদির মুন্না।এ বিষয়ে নওগাঁ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সাইফুল ইসলাম জানান, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি । সহকারি শিক্ষক তন্ময় ভৌমিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দ্রুত তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য রাণীনগর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সরকারি চাকুরি ও পাশাপাশি ভিন্ন কোন পেশায় কাজ করার কোন সুযোগ আছে বলে আমার জানা নেই।
সহকারি শিক্ষক তন্ময় ভৌমিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রসংগে জানতে চাইলে রাণীনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাইমেনা শারমিন বলেন, আমি যতদুর জানি এ বিষয়ে একটি কমিটি তদন্ত করছে।
রাণীনগর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার নাদিরউজ্জামান জানান,জেলা শিক্ষা অফিসার উপজেলার বাঁশবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক তন্ময় ভৌমিক এর বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। অভিযোগটি সহকারি শিক্ষা অফিসার আবু রায়হান তদন্ত করছেন।
তদন্তকারি কর্মকর্তা সহকারি শিক্ষা অফিসার আবু রায়হান বলেন, ইতোমধ্যে তিনি সহকারি শিক্ষক তন্ময় ভৌমিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্ত শুরু করেছেন। খুব দ্রুততই তদন্ত শেষে স্বচ্ছ ও সত্য প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত সহকারি শিক্ষক ও সাংবাদিক তন্ময় ভৌমিক সাংবাদিকতায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে সাংবাদিকদের বলেন,আমি চাকুরি শেষে অবসর সময়ে সাংবাদিকতা ও লেখালেখি করি। নওগাঁ শহরে ফ্লাট নির্মানের বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, ঋন করে তিনি ফ্লাট নিমার্ন করছেন।সরকারি চাকরির পাশাপাশি সাংবাদিকতা করা যায় কিনা এমন প্রশ্নে তন্ময় বলেন,বিষয়টি তার জানানেই। তবে সাংবাদিকতার আড়ালে চাঁদাবাজি ও অনৈতিক সুবিধা আদায়ের অভিযোগ সত্য নয় বলে দাবি করেন তন্ময় ভৌমিক।