খালেদা জিয়ার অসুস্থতা প্রসঙ্গে- ওবায়দুল কাদের – হায়াত মউত আল্লাহর হাতে

দৈনিক সময় ডেস্ক:
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার অসুস্থতা প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘মানুষের হায়াত-মউত আল্লাহর হাতে। চিকিৎসা দরকার, সেটা চলছে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ মালিক সমিতির দ্বিবার্ষিক সাধারণ সভা ও কাউন্সিল অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি বলছে- ‘খালেদা জিয়ার কিছু হলেই সরকারকে দায় নিতে হবে’। আমি নিজেও মৃত্যুর কাছাকাছি ছিলাম, একদম মৃত্যুর কাছ থেকে ফিরে এসেছি। একজন মানুষের মৃত্যু হবে, আমরা বিশ্বাস করি, আমাদের যাদের ধর্মবিশ্বাস আছে, মানুষের হায়াত-মউত আল্লাহর হাতে। তার চিকিৎসা চলছে। আইনমন্ত্রী বলেছেন- ‘বিদেশ থেকে ভালো চিকিৎসক এনে চিকিৎসা করা যাবে’। সরকার তো তাকে গলা টিপে মারছে না, তার মৃত্যুর দায় সরকারের ওপর দেবেন, এটা তো ঠিক না।

ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্বাহী আদেশে যে মানবিক দৃষ্টান্ত দেখিয়েছেন, এর তুলনা হয় না। এ জন্যই খালেদা জিয়া এখন বাসায়। কিন্তু বিএনপি নেতারা বলে থাকেন, এটা তাদের আন্দোলনের ফসল। আসলে বিএনপি খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা নিয়ে যতটা না চিন্তিত, এর চেয়ে এটা নিয়ে রাজনীতি করছে বেশি।

তিনি বলেন, আমাদের বয়স হয়েছে, বেঁচে থাকার তো একটা সময়সীমা আছে, জন্মের সঙ্গে মৃত্যু জড়িত। অসুস্থ হয়ে মারা গেলে সরকারের ওপর আপনি কথায় কথায় দোষ চাপাতে পারবেন না।

৭৬ বছর বয়সী সাবেক এ প্রধানমন্ত্রী বহু বছর ধরে আর্থ্রারাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, চোখের সমস্যাসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন। অসুস্থতার জন্য টানা ২৬ দিন ওই হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে ৭ নভেম্বর বাসায় ফেরেন তিনি। এর ছয়দিনের ব্যবধানে খালেদা জিয়াকে আবার ঢাকায় একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তির পর ১৪ নভেম্বর দিবাগত রাত থেকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে সিসিইউতে রাখা হয়েছে।

এর আগে এপ্রিলে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন খালেদা জিয়া। পরে করোনা পরবর্তী জটিলতায় ২৭ এপ্রিল হাসপাতালে ভর্তি হন। সে সময় এক মাসের বেশি সময় হাসপাতালের সিসিইউতে ভর্তি ছিলেন। শারীরিক অবস্থার উন্নতি হলে ১৯ জুন বাসায় ফেরেন। পরে করোনার টিকা নিতে তিনি দুই দফায় মহাখালীর শেখ রাসেল ন্যাশনাল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট অ্যান্ড হাসপাতালে যান।

উল্লেখ্য, দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত হয়ে খালেদা জিয়া ২০০৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কারাগারে যান। করোনা মহামারির প্রেক্ষাপটে গত বছরের ২৫ মার্চ সরকার শর্তসাপেক্ষে তাকে সাময়িক মুক্তি দেয়। এ পর্যন্ত তিন দফায় খালেদা জিয়ার মুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হয়। তবে বিএনপির নেতারা খালেদা জিয়ার শর্তসাপেক্ষে এ মুক্তিকে ‘গৃহবন্দি’ বলছেন। উন্নত চিকিৎসার জন্য পরিবারের পক্ষ থেকে বারবার আবেদন করা হলেও সরকার তা নাকচ করে দেয়। তাকে দেশে থেকেই চিকিৎসা নিতে হবে বলে শর্তও দেওয়া হয়েছে।