ইফতার-সেহরিতে বিদ্যুতের ভয়াবহ লোডশেডিং।
মোঃ মোস্তাইন বিল্লাহ
দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা প্রতিনিধিঃ দেওয়ানগঞ্জ
উপজেলার ঐতিহ্যবাহী সানন্দবাড়ী ও এর প্রতিবেশি এলাকায় পল্লীবিদ্যুতের ভয়াবহ লোডশেডিং শুরু হয়েছে। গত কয়েকদিন ধরে চলছে এ অবস্থা। একদিকে ভয়াবহ লোডশেডিং অন্যদিকে প্রচন্ড তাপদাহ ও গরমে জনজীবন একেবারেই বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
দেখা গেছে, গত এক সপ্তাহ ধরে সানন্দবাড়ী ছাড়াও প্রতিবেশি কাউনিয়ারচর, পাররামরামপুর, লংকারচর , জিগাবাড়ী, মোল্লারচর এলাকায় শুরু হয়েছে প্রচন্ড লোডশেডিং। এখন দিনের বেলায় যখন তখন বিদ্যুত চলে যায়। একবার বিদ্যুত চলে গেলে আসার খবর নেই কয়েক ঘন্টা।
এলাকাবাসীর সাথে কথা হলে তারা জানান, দিন বা রাত বলতে কিছু নেই। গত এক সপ্তাহ ধরে এক ঘন্টা বিদ্যুত চালু থাকলে আরেক ঘন্টা বন্ধ রাখা হচ্ছে। এভাবে দিবারাত্রি ২৪ ঘন্টার মধ্যে ৮ থেকে ১০ঘন্টা বিদ্যুত পাওয়া যাচ্ছে।
এদিকে কৃষকদের সাথে কথা হলে তারা জানান, বিদ্যুত না থাকায় চলতি ইরি—বোরো আবাদে সঠিক সময় এবং পর্যাপ্ত সেচ দেয়া যাচ্ছে না। সময় মতো সেচ না দেয়ায় ক্ষেতেই ধানী জমি চৌচির হয়ে যাচ্ছে।
বিন্দুরচর গ্রামের কৃষক আনিছুর রহমান জানান, ধান ক্ষেতে এখন শীষ বের হচ্ছে। শীষ বের হওয়ার সময় ধান গাছের গোড়ায় পানি থাকা প্রয়োজন। কিন্তু বিদ্যুতের অভাবে ধানী জমিতে পানি সেচ দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। এতে করে ধান ক্ষেতে শীষ বেরুনে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে, ফলে ধানের ফলন কম হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
সানন্দবাড়ী পশ্চিম পাড়া গ্রামের নজরুল ইসলাম ময়না জানান, তাদের এলাকায় বহু ধান ক্ষেতে পানির অভাবে ফেটে গেছে। যতক্ষণ বিদ্যুত থাকে ততক্ষণ সেচ পাম্প চালু থাকলেও সবার ভাগ্যে পানি ক্ষেতে নেয়া সম্ভব হয়না। কারণ সময়মতো বিদ্যুত না থাকায় পানির জন্য জটলা সৃষ্টি হচ্ছে। পাম্প মালিকদের সাথে কৃষকদের এনিয়ে ঝগড়া হচ্ছে প্রতিনিয়ত।
এদিকে আর মাত্র কয়েকদিন পরেই অনুষ্ঠিত হবে পবিত্র ঈদুল ফিতর। চলতি রমজানে তারাবি নামাজ, ইফতার ও শেহরী খাওয়ার সময় বিদ্যুত থাকেনা। এতে মুসুল্লিরা চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।
মার্কেটগুলোতে এখন ক্রেতাবিক্রেতাদের উপচেপড়া ভীড়। ঘন ঘন বিদ্যুত সরবরাহ বন্ধ থাকায় ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের অবর্নণীয় দুভোর্গের শিকার হতে হচ্ছে। প্রচন্ড তাপদাহে জীবন এখন চরম ওষ্টাগত। ঘর থেকে বাইরে বের হলেই গরম ও তাপে শরীর পুড়ে যাওয়ার অবস্থা হচ্ছে।
বিভিন্ন দোকানগুলোতে আইপিএস থাকলেও বিদ্যুত সংকটের কারণে আইপিএস চার্জ হচ্ছে না। এতে ঘুরছে না বৈদ্যুতিক পাখা। গরমে অস্থির সবাই।
প্রসঙ্গক্রমে কথা হয় সানন্দবাড়ি সাব-জোনাল অফিসের এজিএম মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম সাথে। তিনি জানান, সানন্দবাড়ী সাব- জোনাল অফিসের জন্য প্রতিদিন বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে ৮ থেকে ১০ মেগাওয়াট। অথচ প্রতিদিন পাওয়া যাচ্ছে ২—৩মেগাওয়াট। কেন্দ্রীয় জেনারেশনে সমস্যা থাকার কারণে আমাদের বেগ পেতে হচ্ছে। যে কারণে আমাদের সম্মানিত গ্রাহকদের লোডশেডিং দিতে হচ্ছে।