কালীগঞ্জে ইটের ভাটায় ব্যবহার হচ্ছে কাঠ ও বিষাক্ত রাবারের গুড়া রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে চলছে ৮ টি ভাটা

ইপেপার / প্রিন্ট ইপেপার / প্রিন্ট
১৩৫

জিএম মামুন বিশেষ প্রতিনিধি :
সাতক্ষীরার কালিগঞ্জে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ও সরকারি লাইসেন্স ছাড়াই অবৈধভাবে চলছে ৮ টি ইটভাটা। উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ১২ টি ইটভাটা থাকলেও বছরের পর বছর সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে অবৈধভাবে চলছে এসব ভাটা। এছাড়া অধিকাংশ ভাটাতে জ্বালানির জন্য কয়লার পরিবর্তে ব্যবহার করা হচ্ছে কাঠ,তুষকাঠ ও রাবারের গুঁড়া। যার ফলে পরিবেশ দূষণের পাশিপাশি জন জীবন হুমকির মুখে ঠেলে দিচ্ছে ভাটা মালিকরা।
সরেজমিনে যেয়ে দেখা যায় উপজেলার মথুরেশপুর ইউনিয়নের পিরোজপুরে প্রধান সড়কের পাশে অবস্থিত সোনালী ব্রিকস। সরকারি অনুমোদন বিহীন ওই ভাটায় ইট পোড়ানোর জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে রাবারের গুঁড়া ও কাঠ। এছাড়া ভাটার পাশেই রয়েছে বসত বাড়ি ও ফসলি জমি। হাইকোর্টের রিট নিয়ে সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে নির্বিঘ্নে চলছে ওই ভাটা।
কুশুলিয়া ইউনিয়নের ঠেকরায় অবস্থিত যমুনা অটো ব্রিকস। সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে চলছে ভাটার কার্যক্রম। ওই ভাটার পাশে রয়েছে বসত বাড়ি ও ফসলি জমি, ইউনিয়ন পরিষদ ও ভূমি অফিস। তবুও প্রশাসনকে বৃদ্ধা আঙুল দেখিয়ে নিজের প্রভাব খাটিয়ে ভাটার মালিক অবৈধভাবে চালিয়ে যাচ্ছেন কার্যক্রম। এছাড়া উপজেলার চম্পাফুল ইউনিয়নের উজিরপুরে অবস্থিত টিআরবি ব্রিকস। সরকারি অনুমোদন থাকলেও ভাটার পাশে রয়েছে বাজার, স্কুল ও বসতবাড়ি। তবুও নির্বিঘ্নে চলছে ভাটাটি। মথুরেশপুর ইউনিয়নের হোসেনপুরে অবস্থিত এফবিবি ব্রিকস‌ ও নাসিফ ব্রিকস সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে অনুমোদন বিহীন চলছে ওই দুটি ভাটা। ইট পোড়ানোর কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে কাঠ ও টায়ারের গুঁড়া।
নলতা ইউনিয়নের সেহেরায় অবস্থিত হোসেন ব্রিকস। কোন প্রকার লাইসেন্স ছাড়াই অনুমোদন বিহীনভাবে দীর্ঘ দিন ধরে চলছে ওই ভাটার কার্যক্রম। ইট পোড়ানোর কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে তুষকাঠ ও রাবারের গুঁড়া। এছাড়া কুশুলিয়া ইউনিয়নের ঘোজাডাঙায় অবস্থিত এসবি ব্রিকস। সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে চলছে ভাটার কার্যক্রম। ইট পোড়ানোর কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে টায়ারের গুঁড়া ও কাঠ।
পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমতি ও সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে গত পাঁচ বছর ধরে ভাড়াশিমলা ইউনিয়নের দাদপুরে এমবি ব্রিকস ও নিউ এমবি ব্রিকস নামে দুইটি ইটের ভাটা চলছে। শুধু তাই নয় ভাটা দুইটিতে কয়লার পরিবর্তে পোড়ানো হচ্ছে প্রচুর পরিমাণে কাঠ ও রাবারের গুড়া।
অবৈধভাবে ভাটা চালোনোর বিষয় জানতে চাইলে অধিকাংশ ইট ভাটা মালিক জানান, হাইকোর্টে রিট করে তাদের ভাটার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। এছাড়া কয়লার দাম অতিরিক্ত বেশি হওয়ায় তারা কাঠ,তুষকাঠ ও রাবারের গুঁড়া পোড়াচ্ছেন বলে জানান।
শুধুমাত্র উচ্চ আদালতে একটি রিটের মাধ্যমে সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে বছরের পর বছর অবৈধভাবে চলছে এসব ইটভাট। উচ্চ আদালতে রিট করার কারণে পরিবশে অধিদপ্তর অবৈধ এসব ইটভাটার বিরুদ্ধে কোনো আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারছে না। এছাড়া স্থানীয় প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের নজরদারি না থাকায় অবৈধ এসব ভাটায় ব্যবহৃত হচ্ছে কাঠ ও তুষকাঠ এবং টায়ার পোড়ানো কালি।
বিষয়টি জানার জন্য কালিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার রহিমা সুলতানা বুশরা তিনি বলেন আমি বিষয়টা অবগত নই। তবে কালীগঞ্জ ইটভাটা সমিতির সভাপতি সাথে কথা বলেছি। কোন ভাটায় দুর্নীতি অনিয়ম পেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করব বলে আশ্বস্ত করেন।

এই বিভাগের আরও সংবাদ