কালিগঞ্জ আইয়ুব আলীর বাড়িতে চলছে রমরমা দেহ ব্যবসা
জিএম মামুন বিশেষ প্রতিনিধি:
সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার কুশুলিয়া ইউনিয়নের মহৎপুরে একটি বাড়িতে উঠতি ও মধ্য বয়সী নারীদের নিয়ে চলছে রমরমা দেহ ব্যবসা। অভিযুক্ত দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সুন্দরী কম বয়সী নারীদের বাড়িতে রেখে দেহ ব্যবসার এই হাট বসিয়ে প্রতিনিয়ত কামিয়ে নিচ্ছেন হাজার হাজার টাকা। তবে বিভিন্ন স্থান থেকে নারীদের বাড়িতে আনার আগেই ওই ব্যবসায়ী ভুয়া কাবিন নামা করে স্ত্রী’র পরিচয় দিয়ে দেহ ব্যবসা চালিয়ে যান। তবে এই বিয়ে স্থায়ী হয় ৫-৬ দিন। প্রশাসনের হাত থেকে বাঁচতে ভুয়া কাবিন করেন তিনি।
দীর্ঘদিন ধরে তিনি আইন শৃংখলাবাহিনীর চোখ ফাকিঁ দিয়ে এ সমস্ত অপকর্ম করলেও থেকে গেছেন সবার আড়ালে। এসব ঘটনা জানার পরে ফুঁসে ওঠে এলাকাবাসী। অপরদিকে এই দেহ ব্যবসার কারণে এলাকার উঠতি বয়সের যুবকরা প্রতিনিয়ত হচ্ছেন বিপদগামী।
ফলে যুবকদের অভিভাবকরা রীতিমতো তাদের সন্তানদের নিয়ে উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠায় দিন কাটাচ্ছেন। নারী ব্যবসায়ী কুশুলিয়া ইউনিয়নের মহৎপুর গ্রামের জোবেদ আলীর ছেলে আইয়ুব আলী (৩৬)।
সোমবার (১৪ নভেম্বর) রাতে আশাশুনি উপজেলার গোদাড়া গ্রামের মোস্তফা মোল্লার মেয়ে মর্জিনা খাতুন (২৩) নামের এক কম বয়সী নারীকে নিয়ে আসে তার বাড়িতে। একজন সংবাদকর্মী খদ্দের সেজে যায় ওই বাড়িতে। এসময় বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করতেই অপর একজন খদ্দেরকে অপকর্মে লিপ্ত থাকতে দেখতে পায় । এসময় ওই সংবাদ কর্মী জানতে চাইলে আইয়ুব আলী বলেন বাইরে থেকে একটা করে মেয়ে নিয়ে এসে দেহ ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। একটা মেয়ে ৪-৫ দিন তার বাড়িতে রাখেন। পরবর্তীতে আবার নতুন একটা মেয়ে নিয়ে আসেন। তার নিজস্ব খদ্দেরদের মনোরঞ্জনের জন্য। বিনিময়ে প্রতি খদ্দের ৫ ‘শ করে টাকা তাকে দেন বলে তিনি স্বীকার করেন। ওই সংবাদ কর্মীর সাথে নারী ব্যবসায়ী আইয়ুবের কথাপকথন (ভিডিও) আকারে সংরক্ষিত রয়েছে । পরবর্তীতে সাংবাদিক পরিচয় দিলে ঘাবড়ে যায় ওই ব্যবসায়ী। বিষয়টি জানতে অধীর আগ্রহে ছুটে আসে স্থানীয়রা।
ঘটনা জানাজানি হয়ে গেলে সেই নারীর চুক্তি কৃত বাড়ির মালিক দালাল পড়েন চরম বিপাকে । পরবর্তীতে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে মর্জিনা তার স্ত্রী বলে পরিচয় দেন আইয়ুব আলী । এসময় তারা স্বামী-স্ত্রীর পরিচয় দিয়ে কাবিন দেখান। ভূয়া কাবিন বলে পুলিশ চ্যালেঞ্জ ছুড়ে তাদেরকে সোমবার রাত ১২ টার দিকে থানা হেফাজতে নিয়ে যায়। এছাড়াও পুলিশ দালাল আইয়ুব আলীর বাড়ি থেকে বিপুল পরিমাণ জন্মবিরতিকরণ পিল এবং কনডম উদ্ধার করে। যা সংবাদকর্মীদের ক্যামেরায় ভিডিও এবং ছবি সংরক্ষিত আছে।
স্থানীয় সাইদুল, রাজ্জাক, রাশেদ আবু মুসাসহ অনেকে জানান,ওই দালাল দীর্ঘদিন ধরে তার বাড়িতে বাইরে থেকে নারী নিয়ে এসে দেহব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। একটি নারী এনে ৫ -৬ দিন তার বাড়িতে রেখে রমরমা দেহ ব্যবসা চালিয়ে যায়। এছাড়া নারীদের দেহ ব্যবসার জন্য তার বাড়িতে নিয়ে আসার আগে একটি ভূয়া বিয়ের কাবিন নামা তৈরি করে রাখে ওই দালাল।এবিষয়ে সার্বিক সহযোগিতা করে তার স্ত্রী মর্জিনা খাতুন (৩৪)। তবে এলাকাবাসী তার এই অপকর্মের প্রতিবাদ করতে যেয়ে মিথ্যা মামলা শিকার হয়েছে। এছাড়া তার স্ত্রী জেলা আওয়ামীলীগের একজন প্রভাবশালী নেতার আত্নীয় পরিচয় দিয়ে অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে।তার এমন অপকর্মের প্রতিকার চান স্থানীয়রা।
এবিষয়ে অভিযুক্ত নারী ব্যবসায়ী আইয়ুব আলী তার বাড়িতে দেহ ব্যবসার কথা অস্বীকার করেন। তিনি গত ৫ দিন আগে দ্বিতীয় বিয়ে করেছেন বলে স্বীকার করেন। তার দ্বিতীয় স্ত্রী তাদের বাড়িতে বেড়াতে এসেছেন বলে তিনি জানান।
পুলিশ হেফাজতে নেওয়া আইয়ুবের দ্বিতীয় স্ত্রী মর্জিনা খাতুন বলেন , সে তার স্বামীর বাড়িতে বেড়াতে এসেছেন। দেহ ব্যবসার বিষয় অস্বীকার করেন তিনি।
এবিষয়ে কালিগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক আবু হাছান শিকদার জানান, আইয়ুব আলী ও মর্জিনাকে আটক করে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দেয়। স্থানীয়দের অভিযোগের ভিত্তিতে তাদের থানা হেফাজতে নিয়ে আসা হয়েছিল। কাবিন নামা দেখে যাচাই বাছাই করে মঙ্গলবার (১৫ নভেম্বর)সকালে তাদেরকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তবে আইয়ুব আলীর বিরুদ্ধে থানায় মাদক মামলা রয়েছে। এছাড়া তার বাড়িতে বিভিন্ন নারী নিয়ে এসে দেহ ব্যবসার ও অভিযোগ রয়েছে।