ধূপ ধুনো ফুল তুলসি দিয়ে সিঁদুর মেখে হাসিমুখে নেচে গেয়ে দেবীকে বিদায়।

ইপেপার / প্রিন্ট ইপেপার / প্রিন্ট
১৮৯

মোঃ ফরিদ উদ্দিন: শ্যামনগর থেকে সারাদেশের ন্যায় শ্যামনগর উপজেলায় পালিত হল সনাতন ধর্ম অবলম্বীদের শারদীয় দুর্গাপূজা।

আজ (বুধবার)। প্রতিমা বিসর্জনের মধ্যদিয়ে শেষ হল সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা। এ দিনেই দেবী মর্ত্য ছেড়ে ফিরে যাবেন স্বামীগৃহ কৈলাসে। তাই মণ্ডপে মণ্ডপে আজ শুধুই বিষাদের ছায়া। উলুধ্বনি, শঙ্খ, ঘণ্টা আর ঢাকঢোলের বাজনায় থাকবে দেবী দুর্গার বিদায়ের সুর।

- Advertisement -

পুরাণ মতে, বিজয়া দশমীর অন্যতম আয়োজন ‘দেবীবরণ’। রীতি অনুযায়ী, সধবা নারীরা স্বামীর মঙ্গল কামনায় দশমীর দিন সিঁদুর, পান ও মিষ্টি নিয়ে দুর্গাকে সিঁদুর ছোঁয়ান। দেবীর পায়ে সিঁদুর ছোঁয়ানোর পর সেই সিঁদুর প্রথমে সিঁথিতে মাখান, পরে একে অন্যের সিঁথি ও মুখে মাখেন। মুখ রঙিন করে হাসিমুখে দেবীকে বিদায় জানান, যা সিঁদুর খেলা নামে পরিচিত।

বুধবার (৫ অক্টোবর) সকাল ৯টা ৫৭ মিনিটের মধ্যে দশমী বিহিত পূজা শুরু ও পূজা শেষে দর্পণ-বিসর্জন দেওয়া হবে। এরপর বিজয়া দশমী উপলক্ষে বিকেল ৪টায় আয়োজন করা হবে শোভাযাত্রা।

শ্যামনগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি )জনাব ওয়াহেদ মোরশেদ বলেন, বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনে যেন কোনো বিশৃঙ্খলা না হয় এজন্য মন্দিরগুলোকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় আয়োজন ও সুবিধামতো সময়ে প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হবে।

গত ২৫ সেপ্টেম্বর দেবী দুর্গার আবাহন বা মহালয়ার মধ্য দিয়ে দেবী পক্ষের শুরু হয়। আর মহাষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে ১ অক্টোবর শুরু হয় শারদীয় দুর্গাপূজা। এরপর হাসি-আনন্দ আর পূজা-অর্চনার মধ্য দিয়ে কেটে গেছে চারটি দিন। আজ সকালে দশমী বিহিত পূজা শেষে দর্পণ-বিসর্জনের মধ্য দিয়ে বিদায় জানানো হবে দেবী দুর্গাকে। আর প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়েই শেষ হবে বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা।

মঙ্গলবার (৪ অক্টোবর) মহানবমীতে প্রতিটি মণ্ডপ ও মন্দিরে দেবীর বন্দনায় ছিল বিষাদের সুর। ঢাকঢোল, কাঁসর ঘণ্টাসহ বিভিন্ন বাদ্যে দেবীর বিদায়ের সুরই শোনা গেছে।

শ্যামনগর ,হরিনগর, মুন্সিগঞ্জ উত্তর কদমতলা হরিনাম সেবাশ্রম মন্দিরসহ বিভিন্ন মন্দির-মণ্ডপে দর্শনার্থীর ভিড় ছিল আগের তিনদিনের তুলনায় অনেক বেশি। অনেক মণ্ডপে মানুষের ভিড় ছিল উপচেপড়া।

পঞ্জিকা অনুযায়ী, এবার দেবী মর্ত্যে এসেছেন গজে (হাতিতে) চেপে। গজে চড়ে দেবীর আগমনের অর্থ হলো শুভ। মনে করা হয়ে থাকে, দেবী যদি গজে চড়ে মর্ত্যে আসেন তাহলে তিনি সঙ্গে করে সুখ, সমৃদ্ধি নিয়ে আসেন। হাতি হচ্ছে জ্ঞান ও সমৃদ্ধির প্রতীক। আর আজ বিজয়া দশমীতে দেবী মর্ত্য ছাড়বেন নৌকায় চড়ে। নৌকায় চড়ে মত্য ছাড়লে ভক্তের মনোবাসনা পূর্ণ হবে। পৃথিবী হয়ে ওঠে শস্য শ্যামলা। কিন্তু সেই সঙ্গে অতি বর্ষণ বা প্লাবনের আশঙ্কাও দেখা দেবে।
শ্যামনগর ২০টি ইউনিয়নেপূজা উদযাপন পরিষদের হিসাবে ১০৪টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা হচ্ছে।

এই বিভাগের আরও সংবাদ