মুন্সীগঞ্জ ইউনিয়নে জেলে কার্ডের চাউল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে

ইপেপার / প্রিন্ট ইপেপার / প্রিন্ট
৮১

শ্যামনগর প্রতিনিধি।।

সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার মুন্সীগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদে জেলে কার্ডের চাউল বিতরণে অর্থ আত্বস্বাৎ ও চাউল কম দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে চেয়ারম্যান অসীম কুমার মৃধার বিরুদ্ধে । ১১৯৩ জন জেলে বাওয়ালীদের কাছ থেকে জন প্রতি ২ শত টাকা হিসেবে মোট ২৩৮৬০০ টাকা আদায় করা হয়েছে।

- Advertisement -

ইং ২/৩/৪ জুন তারিখে ৭ নং মুন্সীগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও সদস্যদের উপস্থিতিতে ইউনিয়ন পরিষদে এই চাউল বিতরণ করা হয়।
মৎস্য প্রজননকালীন সময়ে ৬৫ দিন জেলে বাওয়ালীদের মৎস্য আহরন বন্ধ থাকায় সরকারের পক্ষ থেকে মানবিক সহায়তা (ভিজিএফ) চাউল প্রদান হিসেবে ৮৬ কেজি চাউল জন প্রতি জেলেদের বরাদ্দ করা হয়। তার প্রথম ধাপে ৫৬ কেজি জনপ্রতি হিসেবে মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নে ১১৯৩ জন জেলেদের ৬৬ টন ৮ শত ৮ কেজি চাউল বরাদ্দ হয়। মুন্সিগজ্ঞ ইউপি চেয়ারম্যান অসীম কুমার মৃধা জেলেদের কার্ড প্রতি ২ শত টাকা নিয়ে ২২ থেকে ২৫ কেজি চাউল বিতরন করেছে। অর্থ আদায় ছাড়াও ৩৬ টন ৯ শত ৮৩ কেজি চাউল তিনি আত্মসাৎ করেছেন তিনি। সামুদ্রিক জলসীমায় নিষিদ্ধকালীন সময়ে বিরত থাকা জেলেদের মানবিক সহায়তা (ভিজিএফ) চাউল প্রদানে এমন নৈরাজ্য সীমাহীন দূর্নীতি চলেলেও প্রশাসন থেকে এখনও কোন প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহন করা হয়নি।
মুন্সীগঞ্জ ইউনিয়নের একাধিক কার্ডধারী জানায় আমাদের এই ৬৫ দিন মাছের প্রজনন রক্ষার্থে মাছ ধরতে দেওয়া হয় না এজন্য আমাদের দুই ধাপে ৮৬ কেজি চাউলের ব্যাবস্থা করলেও প্রথম ধাপে ৫৬ কেজির পরিবর্তে আমাদের দেওয়া হয়েছে ২৩/২৫ কেজি চাউল আবার এই চাউল নিতে দিতে হয়েছে ২০০ টাকা।
জাতীয় মৎস্যজীবী সমিতির শ্যামনগর উপজেলার সভাপতি মুনসুর আলম জানায় মাথাপিছু ৫৬ কেজি চাউল দেওয়ার কথা থাকলেও মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নে জেলেদের মাঝে দেওয়া হয়েছে ২২/২৫ কেজি চাউল। এ ছাড়াও কার্ড প্রতি ২০০ টাকা আদায় করেছেন মুন্সিগজ্ঞ ইউপি চেয়ারম্যান অসীম কুমার মৃধা যাহা উপজেলার অন্যন্য ইউনিয়নে কোন টাকা নেওয় হয়নি এবং পরিমান মত চাউল বিতরণ করেছে ইউপি চেয়ারম্যান বৃন্দ। এমন ভাবে চলতে থাকলে এসব চেয়ারম্যানদের কারনে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হবে বলে আমি মনে করি।

শ্যামনগর উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি আলহাজ্ব জি এম আকবর কবীর জানান, চেয়ারম্যান অসীম মৃধা মাথাপিছু ২৫ কেজি করে বিতরণ করেছেন এমনটি শুনেছি।তিনি এমন অনিয়ম কেন করছেন এবং কেন উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা নীরব আছেন বিষয়টি ভাববার বিষয়।

মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের ট্যাগ অফিসার উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের একাডেমিক সুপারভাইজার মীনা হাবিবুর রহমান জানান, আমি ছুটিতে আছি ছুটির মাঝে চাউল বিতরন করলে আমার কিছু করার নেই। আমাকে চেয়ারম্যান ফোন দিয়েছিল আমি তাকে বলে দিয়েছি চাল যেন কম না হয়। ফেয়ার প্রাইজের যে ডিলার আছে ওটাতে আমি সই করি ভিজিএফ কাগজপত্র চেয়ারম্যান মেম্বররা কখনও আমার কাছে স্বাক্ষরের জন্য আনে নাই।

উপজেলা মৎস্য অফিসার তুষার কান্তি মজুমদার জানান, মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নে চাউল পাবে ১১৯৩ জন জেলে। ওখানে জেলে আছে ৩৩ শত জন, প্রতিজন জেলে চাউল পাবে ৫৬ কেজি। চেয়ারম্যান বাবুর সাথে আমার কথা হয়েছে, তিনি জানালেন অনেক জেলেকে ১টি কার্ডের চাউল ২ জন ৩ জনকে ভাগ করে নিচ্ছে। আমি বলেছি এমনটা করার নিয়ম নেই। আপনি নিয়ম মেনে দেওয়ার চেষ্টা করুন।

এদিকে চেয়ারম্যান অসীম মৃধার সাথে মুঠো ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আমি নিয়ম মেনে কাজ করেছি এবং অন্য কিছু না বলেই তিনি ফোন কলটি কেটে দেন।

এই বিভাগের আরও সংবাদ