বুয়েটে চান্স পেয়েও দারিদ্রতার কারনে পড়াশোনা করতে পারছে না মিরাজ বাবু

ইপেপার / প্রিন্ট ইপেপার / প্রিন্ট
৪৮

মোঃ শাহীন আলম ,লালমিনরহাট প্রতিনিধি: প্রতিবন্ধকতাকে পেছনে ফেলে দরিদ্র পরিবারের সন্তান অদম্য মেধাবী মিরাজ বাবু । এ বছর বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েটে) ১০৪১ তম হয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েও দারিদ্রতার অভাবে ভর্তি ও পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়াই নিয়ে অনিশ্চয়তায় পড়েছেন তার পরিবার। আগামী ২৮ মার্চ তার বুয়েটের ভর্তির শেষ সময়। সে লালমনিহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার ফকিরপাড়া ইউনিয়নের পুর্ব ফকির পাড়া গ্রামের আতোয়ার রহমান ও মা মরিয়ম বেগমের ছেলে মিরাজ বাবু। এক ছেলে এক মেয়ে। বড় মেয়ে আয়েশা সিদ্দিকা সরকারি আলিমুদ্দিন ডিগ্রী কলেজের অনার্স তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। সেও বাড়িতে টিউশনি করে পড়াশোনার খরচ চালান।

মিরাজ বাবু বাবা আতোয়ার রহমান একজন বর্গা চাষী। জায়গা জমি বলতে কিছুই নেই বাড়ি ভিটা ছাড়া। অন্যের জমি বর্গা নিয়ে চাষাবাদ করেন। মিরাজ বাবু বড় বোন আয়েশা সিদ্দিকার টিউশনির টাকা ও সে নিজেও টিউশনির করে এত দিন পড়াশুনা চালিয়ে আসছে। দারিদ্র্যের সঙ্গে সংগ্রাম করে এতদূর এগিয়ে আসার পরও অর্থ-সংকটে প্রকৌশলী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি ও পড়াশোনার উচ্চ শিক্ষার স্বপ্ন পূরণে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।মিরাজ বাবু বড়খাতা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০২১ সালে এসএসসি জিপিএ ৪.৭২ ও হাতীবান্ধা সরকারি আলিমুদ্দিনের ডিগ্রী কলেজ থেকে ২০২৩ সালে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ ৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হন। বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কলেজের শিক্ষকের সহায়তায় এত দূর পড়াশোনা সুযোগ পায়।মিরাজ বাবুর বাবা আতোয়ার রহমান বলেন,আমি তো একজন বর্গা চাষী অন্যের জমির চাষ আবাদ করে কোন মতন সংসার চালাই। এখন ছেলে বুয়েটে চান্স পেয়েছে তার পড়াশুনা করার সাধ্য আমার নেই। কেউ যদি সাহায্য করে তাহলে ছেলেকে পড়াশোনা করাতে পারবো।

- Advertisement -

মিরাজ বাবু বলেন, অষ্টম শ্রেণি পাস করার পর থেকে আমি টিউশনি করাই। সেই টিউশনির টাকা দিয়ে কষ্ট করে পড়াশোনা করছি। এতে স্কুলের শিক্ষক ও কলেজের স্যাররা আমাকে খুবই সহযোগিতা করেছে বিনা টাকায় প্রাইভেটও পড়িয়েছেন। এর আগে গুচ্ছ পরীক্ষায় চুয়েট ও রুয়েড পরীক্ষাও আমি টিকেছি। এখন বুয়েটের চান্স পেয়েছি আমার শখ আমি প্রকৌশলী হব। কিন্তু পরিবারের পক্ষ থেকে পড়াশোনা চালান সম্ভব নয়। তাই আমি পড়াশোনার জন্য বিভিন্ন সংস্থার কাছে সহযোগিতা চাই। স্কুল শিক্ষক নুরুজ্জামান বলেন, শিক্ষকদের সহযোগিতায় বিনা বেতনে পড়ে এসএসসি ও এইচএসসি পাস করেছেন মিরাজ। এখন প্রকৌশলী হওয়ার স্বপ্নপূরণ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে অর্থের অভাবে।

এ বিষয়ে বড়খাতা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাহিদুল বারি বলেন,ছোট থেকে অনেক কষ্ট ও পরিশ্রম করে পড়াশোনা চালিয়ে গেছে মিরাজ। এখন প্রকৌশলী বিশ্ববিদ্যালয় বুয়েটে ভর্তির চান্স পেয়েছে। তার পরিবারের পক্ষে লেখাপড়ার খরচ চালানো অসম্ভব। তার সহযোগিতায় কেউ এগিয়ে এলে হয়তো তার স্বপ্ন পূরণ হবে।হাতীবান্ধা উপজেলা নির্বাহী অফিসার আতিকুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি জানা নেই তবে, আগামীকাল অফিসে আমার দেখা করলে বিষয়টি নিয়ে আমি ডিসি স্যারের সাথে কথা বলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করা হবে।

এই বিভাগের আরও সংবাদ