চরভদ্রাসনে যত্রতত্র গড়ে উঠছে ঔষধের দোকান

ইপেপার / প্রিন্ট ইপেপার / প্রিন্ট
২৩০

সাজ্জাদ হোসেন সাজু(বিশেষ প্রতিনিধি)
ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলার আনাচে কানাচে নিভৃত পল্লিতে সম্প্রতী যত্রতত্র গড়ে উঠছে ঔষধের দোকান। ওষুধ প্রশাসনের নিয়ম কানুন উপেক্ষা করে গ্রামগঞ্জের আনাচে কানাচে ওষুধ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠার ফলে ঝুঁকিতে পড়েছে উপজেলার জনস্বাস্থ্য। অনেক ব্যবসায়ীর ড্রাগ লাইসেন্স নেই বা ফার্মাসিষ্ট করা নেই। কেউ অন্যের ড্রাগ লাইসেন্স সংগ্রহ করে ব্যবসা করছে। আবার কেউ ফার্মাসিষ্ট কোর্সে ভর্তিরত থাকার অজুহাত দেখিয়ে ঔষধের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। এ ছাড়া উপজেলা পদ্মা নদীর অপর পারে চরাঞ্চলের ছোট্ট ছোট্ট হাট বাজারে ও রাস্তার মোড়ে মোড়ে অনুপযোগী ছাপড়া ঘরে গড়ে উঠেছে শতাধিক ঔষধের দোকার। এসব অশিক্ষিত জনবসতির মধ্যে ওষুধ ব্যবসায়ী নিজেরা বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা দিয়ে চলেছে। ফলে উপজেলার প্রায় অর্ধজনগোষ্ঠী এসব অবৈধ ওষুধ ব্যাবসায়ীদের চিকিৎসা ফাঁদে পড়ে জীবনের সর্বনাশ ডেকে আনছে।
এ ব্যপারে বুধবার বিকেলে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ হাফিজুর রহমান জানান, “সম্প্রতী উপজেলায় যত্রতত্র ওষুধ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠার বিষয়টি আমরা অবগত হয়েছি। বিষয়টি উর্দ্ধতনদের সাথে আলাপ করে উপজেলার অবৈধ ওষুধ ব্যবসায়ীদের উচ্ছেদের ব্যবস্থা নেওয়া হবে”।
বাংলাদেশ ক্যামিষ্ট এ- ড্রাগিষ্ট এ্যসোসিয়েশন, উপজেলা শাখা জানায়, উপজেলার মোট ৮৬টি ওষুধ ব্যাবসায়ী অত্র এ্যসোসিয়াশনের আওতাভুক্ত রয়েছে। অনেকেরই ড্রাগ লাইসেন্স নেই। অনেকে অন্যের ড্রাগ লাইসেন্স সংগ্রহ করে ওষুধ ব্যবসা করে চলেছে যা আইনগত বৈধতা নেই। উপজেলা সদর বাজারের ‘মেডিসিন গ্যালারী’ নামক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিক মোঃ জায়েদুর রহমান জানান, “ আমার ড্রাগ লাইসেন্স আছে কিন্তু ফর্মাসিষ্ট কোর্সে ভর্তি রয়েছি, সামনে পরীক্ষায় পাশ করলে সনদ পাবো”। এ ছাড়া উপজেলার চরাঞ্চলে ও রাস্তার মোড়ে মোড়ে প্রায় অর্ধশত ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে যে ঘরগুলো ওষুধ রাখার অনুপযোগী টিনের ছাপড়া ঘর। এসব ঘরগুলো আদ্রতা রক্ষা করে না। ফলে জীবন রক্ষাকারী ঔষধের কার্যকারিতা বিনষ্ট হয়। ওই এ্যাসেসিয়েশনের অন্তর্ভুক্তি ছাড়াও উপজেলার চরাঞ্চলে ছড়িয়ে ছিটিয়ে গড়ে ওঠা বিভিন্ন ঔষধের দোকান বোঝাই করে রাখা হয়েছে ভুঁয়া কোম্পানীজাত ঔষধ। এসব ঔষধের গায়ে সরকারি ট্রেড নাই বা ব্যাচ নং উল্লেখ নাই। কিন্তু বিক্রয় হচ্ছে চড়া দামে।
উপজেলার স্বনামধন্য এক ওষুধ ব্যবসায়ী আবুল হোসেন জানান, উপজেলার দুর্গম এলাকায় পঞ্চাশ পয়সা পিচ দরে ভুঁয়া কোম্পানীর কিনা ওষুধ আমি পাঁচ টাকা দরে বিক্রি করতে দেখেছি”। একই দিন উপজেলার ক্যামিষ্ট এ- ড্রাগিষ্ট এ্যসোসিয়েশনের সেক্রেটারী পিএম কামরুল হাসান জানান, প্রতিমাসে দোকান চেক করে মেয়াদের নিকটবতি ঔষধগুলো কোম্পানীতে ফেরত পাঠানোর নিয়ম থাকলেও গ্রামগঞ্জের দোকানদারদের এ ব্যপারে কোনো সতর্কতা নেই। তাদের ওষুধ কেনার পর বছরের পর বছর ঘরে পড়ে থাকে”।
খোজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলা সদর বাজারে ৩২টি ঔষধের দোকান রয়েছে। মেীলভীরচর বাজারে ৫টি, এমকপি ডাঙ্গী বাজারে ২টি, জাকেরের সুরা বাজারে ৩টি, আমিরের ব্রীজ বাজারে ২টি, নজুর দোকান বাজারে ১টি, এ ছাড়া গাজীরটেক ইউনিয়নের চরহাজীগঞ্জ বাজারে রয়েছে ২২টি, তেলী ডাঙ্গী ছোট্ট বাজারে ৭টি, আলেপের মোড়ে ৩টি, ছাহের মোল্যার বাজারে ২টি, কানাইরটেক মোড়ে ৫টি, সর্বান্দিয়া মোড়ে ২টি, বড় গাজীরটেক বাজারে ১টি, পদ্মার অপর পারে চরহরিরামপুর ইউনিয়নের আমিনখার হাট বাজারে ৫ টি, হাইখান হাটে ৪টি, মনিরখার হাটে ২টি ও মুন্সিরচর বাজারে ২টি সহ উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের আনাচে কানাচে ব্যাঙের ছাতার মত গড়ে উঠেছে অবৈধ ঔষধের দোকান।

এই বিভাগের আরও সংবাদ