চরভদ্রাসনে আশ্রয়কেন্দ্রে রাতের বেলায় বহিঃরাগত দুর্বৃত্ত বখাটেরা অবাধ বিচরণ
ফরিদপুর জেলা প্রতিনিধি-
ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলায় প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পণ্ড২ এর আওতায় মোট ৪৬৭টি গৃহহীন পরিবারকে পূনর্বাসন করা হয়েছে। এরমধ্যে উপজেলা সদর ইউনিয়নের মাথাভাঙ্গা গ্রামের পদ্মা পারে এ বছর পূনর্বাসন করা হয়েছে ৯২টি গৃহহীন পরিবার। আধাপাকা এসব পরিবারের বসতিরা স্বাচ্ছন্দে দিন কাটাচ্ছেন। কিন্তু আশ্রয়কেন্দ্রে রাতের বেলায় বহিঃরাগত দুর্বৃত্ত বখাটেরা অবাধ বিচরণ করে বিভিন্ন অপকর্মে লিপ্ত হচ্ছে বলে জানা গেছে। এতে ওই আশ্রয়কেন্দ্রের বসতিরা আতংকের মধ্যে থেকে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে। তারা পরিবার পরিজন ও মালামালের নিরাপত্তা রক্ষার জন্য রাত জেগে পাহাড়া দিয়ে চলেছে বলে জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার ওই আশ্রয়কেন্দ্রের এক বসতি মুরাদ বেপারীর স্ত্রী রহিমা বেগম (৪০) জানায়, “সাবেক ইউএনও তানজিলা কবির ত্রপা স্যার এ আশ্রয়কেন্দ্রটি অত্যান্ত যতেœর সাথে গড়েছিলেন এবং আমাদের রাস্তা থেকে কুড়িয়ে এনে পূনর্বাসন করে গেছেন। তিনি থাকতে প্রতিদিন আমাদের খোজখবর নিত এবং আমরা শান্তিতে ছিলাম। কিন্তু কিছুদিন ধরে রাতের বেলায় অজ্ঞাত বখাটের দল আশ্রয়কেন্দ্রে এসে মাদক সেবন ও দুস্থ পরিবারের অটোরিক্সা চুরির পাঁয়তারা করছে। আমরা কোনো কথা বললে আমাদেরকে মেরে ফেলার হুমকী দিচ্ছে সন্ত্রাসীরা। সে আরও জানায়, পদ্মা পারে উন্মুক্ত ফসলি মাঠের মধ্যে গড়া এ আশ্রয়কেন্দ্রের আশপাশে কোনো বসতি নেই। তাই রাতজেগে আমরা পরিবার পরিজন ও মালামাল পাহাড়া দিচ্ছি”।
আরেক গৃহিনী ইতি আক্তার (২৫) জানায়, “ আমার পরিবারের একমাত্র অবলম্বন একটি অটোরিক্সা। স্বামী শহীদ মোল্যা দিনভর রিক্সা চালিয়ে সংসার চালায়। রিক্সাটি ঘরের বাইরে থাকে বলে রাত জেগে পাহাড়া দেই”। আশ্রয়কেন্দ্রের বসতি শাহাবদ্দিনের স্ত্রী হ্যাপী আক্তার (২০) বলেন, “ আমার স্বামী গাড়ীর ড্রাইভার। বেশীরভাগ সময় ঢাকায় থাকে। আশ্রয়কেন্দ্রে রাতভর সন্ত্রাসীরা দাপটের সাথে যেভাবে আনাগোনা করে তাতে আমাদের ইজ্জত সম্মান রক্ষার আতঙ্ক নিয়েই রাতে কেটে যায়”। এ সময় গৃহিনী ঝুমা আক্তার (৩২) জানায়, আমাদের দাবী আশ্রয়কেন্দ্রের চারপাশে কাটাতারের বেড়া সহ একটি গেইট করলে এবং রাতের বেলায় মাঝে মধ্যে টহল পুলিশ পরিদর্শন করলে কিছুটা নিরাপত্তা রক্ষা হবে”।
এ ব্যপারে চরভদ্রাসন থানার অফিসার ইনচার্জ আবদুল ওহাব বলেন, “আশ্রয়কেন্দ্রে বখাটেদের উৎপাতের বিষয়টি আমাকে কেউ জানায় নাই। তিনি কঠোর পদক্ষেপ নিবেন বলে জানান”। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মেহেদী মোর্শেদ বলেন, “ আশ্রয়কেন্দ্রে নিরাপত্তা রক্ষার জন্য সব ধরনের ব্যাবস্থা নেওয়া হবে”।